নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকা করছে যশোর বিএনপি

যশোর জেলা বিএনপির অফিস। ফাইল ছবি
তৌহিদুর রহমান, যশোর
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:৫০ | আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৬:৫০
নিষ্ক্রিয় নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তালিকা করছে যশোর জেলা বিএনপি। এরই মধ্যে শতাধিক নেতাকে সতর্ক করা হয়েছে। নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এতেও যদি তারা সক্রিয় না হন, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবস্থা এখনই নেওয়া না হলেও চিহ্নিতদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, গত জুলাইয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এক দফা আন্দোলন ঘোষণার পর দলটি বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করে। এর পর ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি ছিল তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলটির পরিকল্পনা ছিল, ঢাকাকেন্দ্রিক ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দ্রুত সময়ে লক্ষ্যে পৌঁছানো। ২৮ জুলাইয়ের মহাসমাবেশ ঘিরে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ নেতাকর্মী তখন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত স্পটগুলোতে নেতাকর্মীর জমায়েত আশানুরূপ না হওয়ায় সেই কর্মসূচি পুরোপুরি সফল হয়নি বলে দলটির মূল্যায়নে উঠে আসে। বিষয়টি বিএনপির হাইকমান্ডকে উদ্বিগ্ন ও নাখোশ করে। পরিস্থিতি সামলাতে আন্দোলনের পরিকল্পনায় পরিবর্তনের পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে গ্রহণ করা হয় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি। দায়িত্বশীল নেতার মধ্যে কোনোরকম গা-ছাড়া ভাব দেখা গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।
কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, যশোর জেলা বিএনপি আটটি উপজেলায় নিষ্ক্রিয় নেতাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করছে। প্রাথমিক পর্যায়ে শতাধিক নেতাকে এরই মধ্যে সতর্ক করেছে দলটি। তাদের ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা ও মতবিনিময় করতে বলা হয়েছে, যাতে তারা সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
যশোর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই তত্ত্বাবধায়কের দাবি আদায় করা হবে। বর্তমান সরকারের নির্যাতন ও গায়েবি মামলার কারণে আমাদের অনেক নেতা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। তাদের সক্রিয় হতে উদ্বুদ্ধ করছি। অনেকে মাঠের রাজনীতিতে ফিরতে শুরু করেছেন।’
বিএনপি নেতারা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা নন, তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে পুলিশ। পুলিশ নিরপেক্ষ থাকলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীকে মোকাবিলা করার সক্ষমতা রয়েছে বিএনপির। তার পরও সব বাধা উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সরকার পতন আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে সব প্রস্তুতি রয়েছে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলে সরকার আর পুলিশ প্রশাসন অস্থির হয়ে যায়। এর কারণ, সরকার দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও দলীয় কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার এমন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড করছে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে নেতাকর্মীকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ থেকেই কর্মসূচি সফল করবে। আমরা নিষ্ক্রিয় নেতাদের আবারও দলের আন্দোলনে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘গত ১৪ বছর ধরে আমরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। যশোরের সব পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা করা হয়েছে। ভারতে থেকেও আমাদের নেতারা মামলার আসামি হয়েছেন। তাই পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। আমাদের অল্প কিছু নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। তাদের সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা চলছে। আশা করছি, সামনে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে তারাও শামিল হবেন।’
- বিষয় :
- যশোর
- বিএনপি
- তালিকা
- সাংগঠনিক ব্যবস্থা