ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

পুকুর দখলে নিতে আ’লীগ নেতার বিষ প্রয়োগ

পুকুর দখলে নিতে আ’লীগ নেতার বিষ প্রয়োগ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩ | ০৬:০৭ | আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৩ | ০৬:০৭

জয়পুরহাটে কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের বিয়াল এলাকায় মৎস্যজীবীদের লিজ নেওয়া পুকুর দখলে নিতে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শহিদুলের বিরুদ্ধে। পরে পুকুর থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ ধরে নিয়ে যায় ওই নেতার লোকজন।

বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে শহিদুল সমিতির লোকজনের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। পুলিশ পুকুর দেখভালের দায়িত্বে থাকা মৎস্যজীবী বিয়ালা গ্রামের ইয়াকুব আলী ও আব্দুল আলিমকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযুক্ত শহিদুল বলেন, ‘সাবেক সভাপতির কাছ থেকে দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছি। গত শুক্রবার ইউএনওর মৌখিক নির্দেশে পুকুরে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। পুলিশ বাধা দিলে ফিরে আসি। গতকাল গিয়ে মাছ ধরে নিয়ে আসি। তবে বিষ প্রয়োগ করেছে সমিতির লোকজন। সে কারণে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করা হয়েছে।’

শহিদুল আরও বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। সবার সঙ্গে কথা বলেই পুকুরে এসেছি। কার কী করার আছে তা করতে পারে।’

ঘটনাস্থলে কথা হয় পুকুর দেখভালের দায়িত্বে থাকা বুলবুল আহম্মেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে শহিদুল পুকুর পাড়ে এসে বলেন, এখান থেকে চলে যা। তা না হলে তোকে মেরে ফেলব। ভয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি শহিদুল পুকুরের পানিতে বিষ ছিটিয়ে দিচ্ছেন। বিষয়টি সমিতির সভাপতিকে জানাই।

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বিয়ালা মৌজার ৩.৮৯ একর পুকুরটি ধুনট মৎসজীবী সমবায় সমিতিকে লিজ দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এর পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল মাত্রাই ইউপি চেয়ারম্যান আনম শওকত হাবীব তালুকদার লজিকের মদদে গত শুক্রবার লোকজন নিয়ে ওই পুকুরের মাছ ধরতে যান। দুই পক্ষই পুকুর পাড়ে অবস্থান নিলে প্রশাসন এসে তাদের ফেরত পাঠান। পরে চেয়ারম্যানের পরামর্শে শহিদুল ওই পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ তুলে নিয়ে যান।

ঘটনাস্থলে কথা হয় মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনম শওকত হাবিব তালুকদার লজিকের সঙ্গে। তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ডিসি অফিসে মিটিংয়ে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সমিতির সভাপতি মহির উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে সকালে পুকুরে গিয়ে দেখি মাছগুলো লাফঝাঁপ করছে। কিছুক্ষণ পর শহিদুল ও চেয়ারম্যান লজিক লোকজন নিয়ে পুকুর পাড়ে এসে জাল দিয়ে মাছ ধরতে থাকেন। নিষেধ করলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘তুই এখনই চলে যা, সন্ধ্যায় পরিষদে দেখা করিস।’

মহির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় সমিতির ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ওই সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার ফকির শহিদুলকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

ইউএনও জান্নাত আরা তিথি বলেন, দুই পক্ষকে আগেই সমঝোতা করতে বলেছি। কিন্তু মাছ ধরতে বলিনি। বিষ প্রয়োগ ও মাছ ধরার ঘটনা জানতে পেরে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×