ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ছাত্রীর সাহসিকতায় প্রাণ বাঁচল দুই নারীর

ছাত্রীর সাহসিকতায় প্রাণ বাঁচল দুই নারীর

মাসুমা খাতুন

খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মায়া রানী বিশ্বাসের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সদরের কলেজপাড়ায়। গতকাল রোববার দুপুরে তাঁর রান্নাঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ খুলে যায়। এ সময় জানালা বন্ধ থাকায় ঘরের ভেতরে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। সশব্দে সিলিন্ডার থেকে বের হতে থাকে গ্যাস। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন বাড়িতে থাকা বড় বোন রিনা রানী।

এক পর্যায়ে রিনা চিৎকার করে ঘটনাটি সবাইকে জানান। খবর শুনে শতাধিক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে যায়। ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ অফিসে খবর দেওয়া হয়। এ সময় এইচএসসি পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তিন ছাত্রীও উৎসুক জনতার সঙ্গে উপস্থিত হয়। তাদের ভেতরে একজন মাসুমা খাতুন সাহস করে রান্নাঘরে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের চাবি বন্ধ করে। পরে বন্ধ জানালা দরজা খুলে দেয়।

এভাবে মাসুমার সাহসিকতা আর বুদ্ধিমত্তায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের হাত থেকে রক্ষা পায় পরিবারটি। ঘটনার সময় রান্নাঘরের পাশেই ছিলেন শিক্ষিকার শয্যাশায়ী মা আশা লতা রানী (৮৪)। কিছু সময় পর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

মাসুমা খোকসা ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ঘটনাস্থলে যায়। তার বাড়ি উপজেলা পরিষদ এলাকায়। বাবা এস এম সোহরাব হোসেন। দুর্ঘটনার সময় মালিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক মায়া রানী বিশ্বাস কর্মস্থলে ছিলেন।

মাসুমা খাতুন বলে, শব্দ করে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের হচ্ছিল। বন্ধ রান্নাঘরে গ্যাসের গন্ধে যাওয়া যাচ্ছিল না। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস নির্গমন বন্ধ করা ছিল কঠিন। কিন্তু দরজার কাছাকাছি সিলিন্ডার থাকায় কাজটি সহজ হয়েছে। তার অনেক সহপাঠী ও স্থানীয়রা দাঁড়িয়েছিল। তবে তারা বিষয়টি বুঝতে পারেনি।

প্রধান শিক্ষক মায়া রানী বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁর শয্যাশায়ী মা ও বোন দু’জনই দগ্ধ হতেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ছাত্রীটিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। খোকসা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রওশন আলী ছাত্রীর সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, পরিবারটি বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল।

আরও পড়ুন

×