ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

এখনও শেষ হয়নি ৯ বীরনিবাসের কাজ

এখনও শেষ হয়নি ৯ বীরনিবাসের কাজ

ধর্মপাশা উপজেলার মোদাহরপুর গ্রামে নির্মাণাধীন একটি বীরনিবাস - সমকাল

ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৪:৩০

কার্যাদেশ অনুযায়ী গত বছরের শুরুতে বীরনিবাস নির্মাণ কাজ শুরু করে তা একই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ৯টি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি।

এর মাঝে দুটি বীরনিবাস নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ থাকায় সেগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্টরা।

নির্ধারিত সময়ের ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ৯টি বীরনিবাস নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হয়নি। এ নিয়ে সম্প্রতি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের দায়িত্বশীল নেতারা। বীরনিবাসের কাজ শেষ না হওয়া এবং নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকনকে অভিযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বীরনিবাস নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় এক কোটি ২০ লাখ ৫৫৯ টাকা ব্যয়ে ৯টি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স জব্বার বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চুন্নু মিয়া নামে এক ব্যক্তি সেখানে দুটি বীরনিবাস নির্মাণের কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় মোদাহরপুর গ্রামের উপকারভোগী প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার স্ত্রী আমিনা ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম ওমর ফারুকের ছেলে হাবিবে দুজাহান ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। পরে সাবেক ইউএনও কাজ পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। এক পর্যায়ে চুন্নু মিয়ে গত বছরের ২৯ মার্চ থেকে ওই দুটি বীরনিবাসের কাজ বন্ধ করে দেন।

পরে হাবিবে দুজাহান উপকারভোগীদের পক্ষ থেকে এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের পর নির্দেশ দিলে ইউএনও ঠিকাদারের জামানত বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশ দেন এবং চুন্নুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ নেন। পরে উপকারভোগী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার অনুরোধে চুন্নুকে ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কয়টি বীরনিবাস নির্মাণ কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেও সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেননি চুন্নু।

এর আগে এ ব্যাপারে ঠিকাদার মঞ্জুরুল হক সুজন জানিয়েছিলেন, বীরনিবাসের নির্মাণ কাজ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন তাঁর কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে চুন্নুকে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলেছেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার জানান, ইতোমধ্যে ৬টি বীরনিবাসের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ চলমান রয়েছে। অভিযোগকারীদের দাবিসংবলিত স্মারকলিপি পেয়েছেন এবং তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

×