পেনশনের টাকা ও সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাড়ি ছাড়া তারা

দুই মেয়েসহ আলেয়া খাতুন। ফাইল ছবি
পাবনা অফিস
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:২৯ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৩০
পাবনার সুজানগরে পেনশনের টাকা ও সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় প্রতিবন্ধী ভাতিজি-ভাবীকে মারধরসহ কলেজপড়ুয়া আরেক ভাতিজিকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে চাচা মো. আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ তা সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। পরে গত ৩১ আগস্ট আলেয়া খাতুন (৬১) বাদী হয়ে দেবর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মতিনসহ ৭ জনকে আসামি করে পাবনার আমলি আদালত-৩ মামলা করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য সুজানগর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার চরদুলাই গ্রামের ইউসুফ আলী শেখ পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে উচ্চমান সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর আলেয়া খাতুন (৬১) প্রতিবন্ধী মেয়ে আশরাফুল নাহার ইভা (২৮) এবং পাবনার এডওয়ার্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ইসমত জেরিনকে (১৯) নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করতেন। সম্প্রতি আলেয়া খাতুন স্বামীর পেনশনের ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৮০ টাকা পান। এছাড়া স্বামীর নামে সুজানগর পোষ্ট অফিসে ১০ লাখ টাকা এবং সিটি ব্যাংকের পাবনা শাখায় এফডিআর করা ৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা রয়েছেন। জোর করে সেই টাকার নমিনি হন আব্দুল মতিন।
পরে আব্দুল মতিন সুজানগর উপজেলার ভাবানীপুর মৌজায় আলেয়া খাতুনের নামে দশমিক ১০ একর জমি লিখে দিতে চাপ দেন এবং পেনশনের ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। আত্মীয়-স্বজন ও গ্রাম প্রধানদের মাধ্যমে আলেয়া খাতুনকে বারবার চাপ দিতে থাকেন তিনি। টাকা ও জমি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় ২৯ আগস্ট আব্দুল মতিনের নির্দেশে মো. আলী শেখ (৫৬), মোছা লাভলী খাতুন (৪৭), কেয়া খাতুন (১৯), আমেনা খাতুন (৬০), নিজাম উদ্দিন (৪২) ও ইনসান বেগম (৬০) দুই মেয়েসহ আলেয়াকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
মৃত ইউসুফ আলী শেখের স্ত্রী আলেয়া খাতুন সমকালকে বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কোথাও বিচার পাচ্ছি না। মতিনের ভয়ে কেউ কিছু বলছে না। আমার সন্তানদের নিরাপত্তা চাই।’
অভিযুক্ত চাচা ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মতিন বলেন, ‘তার ভাতিজিরা বিপথগামী হয়ে পড়েছে। তাই চাচা হিসেবে আমি শাসন করেছি। জমি বা টাকা চাওয়ার ঘটনা সত্য না।’
এ ব্যাপারে সুজানগর থানার ওসি মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আদালতের আদেশনামা হাতে পেয়েছি।’
- বিষয় :
- পাবনা
- পেনশনের টাকা
- সম্পত্তি
- বাড়ি ছাড়া