সাক্ষাৎকার: ইকরামুল হক টিটু
নানা প্রতিকূলতায় হয়নি কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন

ইকরামুল হক টিটু
মোস্তাফিজুর রহমান, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ০০:০২ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ০০:০২
নগরীর উন্নয়ন ও পরিকল্পনা নিয়ে সমকালের প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু
সমকাল: ঢাকার খুব কাছের এই নগর উন্নয়নে পিছিয়ে কেন?
মেয়র: ময়মনসিংহ প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী নগরী। বিভিন্ন প্রতিকূলতায় এই শহরের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই নগরীর উন্নয়ন যাত্রা শুরু হয়। বিভাগ ও সিটি করপোরেশন ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই যাত্রা বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কিন্তু যাত্রা শুরুর পরই করোনা মহামারি এবং পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এ অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ অল্প সময়ের যাত্রায়ও সিটি করপোরেশনে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। সড়কবাতি স্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, করোনায় নাগরিকদের পাশে থাকা ইত্যাদিসহ অগ্রগতি হয়েছে সব ক্ষেত্রে। তারপরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে এ শহরের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
সমকাল: ময়মনসিংহ ঘিঞ্জি নগরীতে পরিণত হচ্ছে। সড়কগুলো প্রশস্তের পরিকল্পনা আছে?
মেয়র: দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমরা বিভিন্ন ইন্টারসেকশন ও মোড়গুলো প্রশস্তকরণে প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অন্যান্য দেশের মতো আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই সীমাবদ্ধতা না তৈরি হলে এ ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতি দৃশ্যমান হতো। তাছাড়া ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে ১৬০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প চলমান তা শেষ হলেও অনেক সড়ক, মোড় এবং ইন্টারসেকশন প্রশস্ত হবে। সমকাল: বিল্ডিং কোড না মেনে বহুতল ভবন হওয়ায় দিন দিন ময়মনসিংহ নগরী ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কী পদক্ষেপ নেবেন?
মেয়র: বিল্ডিং কোড না মেনে কেউ ভবন করলে সিটি করপোরেশন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। বিল্ডিং কোড না মানায় গত তিন মাসে ১৩৭টি ভবনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কেউ অনুমোদিত নকশার বাইরে ভবন নির্মাণ করলে তাকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
সমকাল: নগরীর টেকসই উন্নয়নে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
মেয়র: ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন উপহার দেওয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহবাসীর স্বপ্নকে পূরণ করেছেন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ময়মনসিংহকে একটি আধুনিক টেকসই নগরী করতে কাজ করছি। দায়িত্ব নেওয়ার পরই আমরা মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ হাতে নিই। কিন্তু কভিড-১৯ এর কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে নগরের উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সড়ক ও ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক কার্যক্রম চলমান। ১৭১ কিলোমিটার সড়কে সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণ এবং খালগুলো থেকে দখল উচ্ছেদ এবং সংস্কারের ফলে সাম্প্রতিক রেকর্ড বৃষ্টিপাতেও ময়মনসিংহ শহর থেকে দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশিত হয়েছে। শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। টেকসই উন্নয়নে শহরে বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড নির্মাণ, শিশুপার্ক, খালগুলোকে সংস্কার করে দুই পাড়ে সৌন্দর্যবর্ধন, বিভিন্ন সড়ক প্রশস্তকরণসহ নানা প্রকল্প প্রস্তাব আমাদের রয়েছে। সমকাল: দক্ষ জনবল না থাকায় উন্নয়ন কাজে কি সমস্যা হচ্ছে?
মেয়র: ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এখনও পৌরসভার জনবল কাঠামো দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। অথচ সীমানা আগের তুলনায় প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজের পরিধি এবং পরিমাণ বেড়েছে অনেক গুণ। ফলে জনবল সংকট থাকায় এসব কাজ সমস্যা তৈরি করছে। তবে আমাদের পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ঘাটতি পূরণে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশনে জনবল নিয়োগ কাঠামো অনুমোদনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আশা করা যায় খুব দ্রুত এ অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।