ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

হবিগঞ্জ-৪

আ’লীগের মনোনয়ন পেতে সরব ৬ নেতা

আ’লীগের মনোনয়ন পেতে সরব ৬ নেতা

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১২:৩২ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১২:৫৩

চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার সংসদীয় আসন হবিগঞ্জ-৪। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতার জন্য নড়েচড়ে বসেছেন দলটির অন্তত ৬ জন হাইভোল্টেজ নেতা।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, পর্যটন ও বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকবর হোসেন জিতু।

হবিগঞ্জ-৪ আসনের অন্যতম ভোট ফ্যাক্টর মাধবপুরের ৫টি এবং চুনারুঘাটের ১৭টি চা বাগানের শ্রমিকদের সমর্থন ও ভোট। স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে জয়ের পাল্লা ভারী রেখেছে আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন একাধিক নেতা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও দলীয় বিভাজন ও কোন্দলের কারণে সম্প্রতি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এ বিষয়টি দলকে ভোগাতে পারে।

গত কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার অবস্থান হারিয়েছে দলীয় ঐক্য ও সমন্বয়হীনতার কারণে। মাধবপুরের ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে বিএনপিপন্থি প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বাকি ছয়টি আওয়ামী লীগ, তার বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে। চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রও বিএনপি দলীয়। চুনারুঘাটের ১০টি ইউনিয়নের ৪টি আওয়ামী লীগের আর বাকি ৬টি বিএনপি এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের দখলে। বর্তমান সংসদ সদস্যের সমর্থক ও দলের অন্যদের মাঝে যে বিভাজন তা এবার আওয়ামী লীগকে ভোগাবে।

বর্তমান এমপির সমর্থকদের দাবি, মাহবুব আলী নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং দল শক্তিশালী হয়েছে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশের নেতাকর্মীরা বলছেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে সরকারের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের মূল্যায়নে কারণে। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে একটি বিশেষ অংশ মূল্যায়ন পাচ্ছে। বাকিরা কোণঠাসা।

এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে টানা দ্বিতীয় দফা এমপি নির্বাচিত হওয়া মাহবুব আলী জানান, দুর্দিনে তিনি নেতাকর্মীর পাশে থাকেন। নির্বাচিত হয়ে তিনি নেতাকর্মীর সঙ্গে সংযোগ নিবিড় করেছেন এবং দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

এদিকে ব্যক্তি পর্যায়ে স্থানীয় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং ক্লিন ইমেজের কারণে জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে ব্যারিস্টার সুমনের নাম। এখন পর্যন্ত সুমন নিজ অর্থায়নে নানা উন্নয়ন করেছেন। গত বছরের বন্যার সময় যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা দিয়ে অর্জন করেছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ার কারণে আসন্ন নির্বাচনে দলটির সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন জানান, সংসদ সদস্য হওয়া তাঁর কাছে মুখ্য নয়। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ যাতে সাফল্য পায় এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

মাহবুব আলী এবং ব্যারিস্টার সুমন ছাড়াও এ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোয়ন পাওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকবর হোসেন জিতু। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলার মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান  জাকির হোসেন চৌধুরী (অসীম), মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা নিজামুল হক মোস্তফা শহীদ রানা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুল হাই রাজিবও রয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ে।

আরও পড়ুন

×