ভেতরে ফিটফাট, বাইরে সদরঘাট

সড়কে থামিয়ে রাখা বিভিন্ন গন্তব্যের বাস। সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ছবি -সমকাল
ফয়সল আহমদ বাবলু, সিলেট
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৩ | ০৯:৪৮
সিলেটের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা নগরীর প্রবেশমুখ কদমতলী। এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগের প্রধান কারণ যানজট। তাই কদমতলীর যানজট নিরসনে ৮ একর ভূমিতে নির্মিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বাস টার্মিনাল। ব্যবস্থাপনা আগের মতোই অগোছালো। অনেকেই বলছেন, ভেতরে ফিটফাট, বাইরে সদরঘাট। এখানে টার্মিনালের ভেতরে থাকে না যানবাহন। আগের মতোই এলোমেলো করে রাখা হয় যানবাহন। এতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে আরও কয়েক গুণ। এ ছাড়া টার্মিনালে বড় বড় ভবন তৈরি হওয়ায় যানবাহন সংকুলান হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। এ কারণে এ যানজট বলে তাদের দাবি।
এদিকে, কদমতলী টার্মিনালের সামনে গেলে আর কোনো রক্ষা নেই। যানজটের পাহাড় ঠেলতেই হবে। সকালে স্কুল, কলেজ ও অফিসগামী মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নসিবা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মালিহা মুনতাহা ও সুপ্রিয়া বিশ্বাস জানায়, তাদের বাসা মোমিনখলা এলাকায়। প্রতিদিন যানজটের কারণে তাদের স্কুলে যেতে বিলম্ব হয়। তারা জানায়, অত্যাধুনিক টার্মিনাল থাকার পরও তাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কেন এ টার্মিনাল করা হলো এমন প্রশ্ন তাদের।
কদমতলীতে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর অফিস কদমতলী পয়েন্টেই। অনেক সময় গাড়ি রেখে অফিসে হেঁটে যেতে হয়। এছাড়া সড়কের যে হাল তাতে অনেক কাঠখড় ডিঙ্গিয়ে যেতে হয় কার্যক্ষেত্রে। তিনি বলেন, টার্মিনালের ভেতর কেন গাড়ি রাখা হয় না? যদি তারা সঠিকভাবে টার্মিনালের ভেতর গাড়ি রাখে তাহলে এ যানজট অনেকটা কমে আসবে।
টার্মিনালের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল টার্মিনাল অনেকটাই খালি পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন লেনে কিছু গাড়ি থাকলেও অধিকাংশই টার্মিনালের সামনে জড়ো করে রাখা হয়েছে। সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট-এমজিএসপি প্রকল্পে সিলেট শহরে দেশের সর্বাধুনিক সুবিধাসংবলিত ও নান্দনিক নির্মাণশৈলীতে কদমতলী বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু হয়। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে ইজারাও দেওয়া হয়েছে টার্মিনালটি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন বলেন– শ্রমিক সংগঠন, মালিক সংগঠন, সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ, সবার সম্মিলিত অবদানে আমরা একটি দৃষ্টিনন্দন বাস টার্মিনাল পেয়েছি। এটি পুরোপুরি চালু হলে যানজট অনেকটা কমে যাবে। তখন দুর্ভোগও অনেকটা কমে আসবে।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম জানান, এ বাস টার্মিনালে আমাদের আশার প্রতিফলন হয়নি। টার্মিনালে বাস রাখার জায়গার তুলনায় বিল্ডিং বেশি হয়ে গেছে। আমাদের হাজারের মতো বাস আছে। টার্মিনালে দেড়শ থেকে দুইশর মতো বাস রাখা যাবে। বাকি বাস আগের মতোই রাস্তায় রাখতে হচ্ছে। শুরু থেকে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বলে আসছি, তারা শোনেননি। এখন আমাদের বলেছেন, পার্শ্ববর্তী ফল মার্কেটের দিকে টার্মিনাল সম্প্রসারণ করে বাস রাখার জায়গা করে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে টার্মিনালের সব কাজ সম্পন্ন, এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের বিষয়টি রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। যানজট নিরসনের জন্যই এটি করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
- বিষয় :
- যানজট নিরসন
- সিলেট
- কদমতলী