ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

'এর নাম বেঁচে থাকা নয়'

'এর নাম বেঁচে থাকা নয়'

ইজাজ আহ্‌মেদ মিলন, গাজীপুর

প্রকাশ: ০২ মে ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ০২ মে ২০২০ | ১৫:৩৭

'এত যন্ত্রণা নিয়ে কি মানুষ বাঁচতে পারে? আমি বেঁচে আছি। তবে এর নাম বেঁচে থাকা নয়। কিছুতেই ভুলতে পারছি না স্মৃতি ফাতেমাকে। কন্যা নূরা আর হাওয়ার দরদমাখা কণ্ঠের ডাক যেন ভেসে আসছে। শিশুপুত্র ফাদিলের অপলক চেয়ে থাকার দৃশ্য ভোলা যায় না।' মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে টেলিফোনে সমকালকে এভাবেই নিজের যন্ত্রণার কথা বলছিলেন রেজোয়ান কাজল। ইন্দোনেশীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী স্মৃতি ফাতেমা, কন্যা নূরা ও হাওয়াকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয় একই ঘরের ভেতর। ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি আট বছরের ছেলে ফাদিলও। ২৩ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের জৈনাবাজার এলাকায় কাজলের দোতলা বাড়ির একটি কক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। করোনা সংকটের কারণে মালয়েশিয়া থেকে কাজল আসতে পারেননি দেশে।

কাজল বলেন, 'আমার আর কী আছে? সবই তো শেষ। কপালে কেন সুখ সইল না'! কথা বলতে গিয়ে কাজল বারবার স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। আটাশ বছর আগে তিনি মালয়েশিয়া যান। সে সময় ইন্দোনেশিয়ার স্মৃতি ফাতেমা পড়াশোনা করার জন্য মালয়েশিয়ায় আসেন।

রেজোয়ান কাজল

দু'জনের সম্পর্ক গভীর হলে ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে ফাতেমাকে বিয়ে করে মালয়েশিয়া ফেরেন। পনেরো বছর আগে তাদের কোল আলো করে আসে সাবরিনা সুলতানা নূরা। কাজল বলেন, তার পাঠানো টাকায় জৈনাবাজার এলাকায় জমি কিনেছিলেন তার বাবা আবুল হোসেন। সেখানে বাড়ি তৈরি করে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে কাজল আবার মালয়েশিয়ায় যান। মাঝে মধ্যে আসেন দেশে। কাজল বলেন, তিন সন্তান তার কলিজার অংশ। দিনে অন্তত ৮-১০ বার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কথা না বললে থাকতে পারতেন না তিনি। অথচ গত ৯ দিন ধরে কথা বন্ধ- বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন কাজল। তিনি বলেন, স্ত্রী ও তিন সন্তানের কবর দেখার জন্য ছটফট করছেন। যারা হত্যা করেছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের বিচার চান প্রবাসী কাজল।

হৃদয়বিদারক এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রথমে পারভেজ নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরে পারভেজের বাবা কাজীম উদ্দিনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। বাড়িতে থাকা টাকা ও মালপত্র লুট করতে গিয়ে তারা চারজনকে হত্যা করে।

আরও পড়ুন

×