কুড়িগ্রামে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

ছবি: সমকাল
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১০:৫১ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১২:০০
উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় জুবুথুবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রাম। এ জেলায় ৭দিন ধরে টানা দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। এরই মধ্যে চলতি শীত মৌসুমে দ্বিতীয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। মাঘের প্রথম সপ্তাহে শুরুতে ঘনকুয়াশার সঙ্গে হাড় কাঁপানো কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে গোটা জেলা শহর। সকাল ১০টা পর্যন্ত দেখা নেই সূর্যের। ঘনকুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত জেলার নৌ-ঘাটগুলো থেকে কোনো নৌযান ছেড়ে যাইনি। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজনকে।
গরম পোশাকের অভাব দেখা গেছে জেলার চরাঞ্চলগুলোতে। গরম পোশাকের অভাবে অনেককে গামছা শরীরে ও মাথায় জড়িয়ে কাজ করতে দেখা যায়। কেউ কেউ বড় ফুলহাতা জামা ২-৩টা একসঙ্গে পরে কাজে বের হয়েছেন।
ঠাণ্ডাজনিত রোগে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর মাধবরামপুর গ্রামের বৃদ্ধা রাবেয়া বেগম (৫৩) বলেন, ‘আইজ কয়েকটা দিন থাকি রইদের (রোদ) দেখা নাই। হাত-পাও ঠাণ্ডাতে শিষ্টা (অবশ) নাগছে (লাগছে)। আগত শীত এমন আছিল (ছিল) না। কাছাকাছিত কোনো মানুষ দেখা যায় না।’
এই গ্রামের আরেক বৃদ্ধ হুজুর আলী (৫৮) বলেন, ‘দিন কন (বলেন) আর রাইত কন সোগ (সব) সময় আজ ৪-৫ দিন থাকি (থেকে) ঝড়ির (বৃষ্টির) নাকান (মতো) কুয়াশা পড়বেইছে (পড়ছে)। সোগ জাগাত কম্বল পায় হামরা তো কম্বল পাই নাই, ছওয়া গুল্যার গরম জামা দরকার। গরিব মানুষ হামার কেনার কি সাধ্য আছে কন।’
রাজারহাটের নাজিমখান ইউনিয়নের ভ্যানচালক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘সকাল থাকি কোনো কামাই নাই। আজকে কুয়াশা আরও বেশি। এমন করি দিন চলবে কেমনে, তোমরায় কন।’
জেলার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে চলতি শীত মৌসুমের দ্বিতীয় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আরও দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, চলমান শীতে এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বিতরণের কাজ চলছে। পাশাপাশি শীতে কর্মহীন মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
- বিষয় :
- কুড়িগ্রাম
- মৃদু শৈত্যপ্রবাহ