ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

যশোরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত

যশোরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত

তীব্র শীতের মধ্যে বৃষ্টি কাঁপিয়ে তুলছে জেলার ছিন্নমূল মানুষকে। ছবি-সমকাল

যশোর অফিস

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৬:০৪ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৭:০৩

যশোরে গত কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। উষ্ণতার চাদর মুড়িয়ে মানুষ যখন ঘুমে মগ্ন, ঠিক তখন বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। যা পরে মাঝারি বৃষ্টিতে রূপ নেয়। বৃষ্টি চলে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে একপশলা বৃষ্টিতেই শীতের মাত্রাকে বাড়িয়েছে দ্বিগুণ। 

বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা খুব একটা নিচে না নামলেও কনকনে ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে। দুপুর একটা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। তবে আকাশে ভাসতে দেখা গেছে মেঘের ভেলা। এদিন সীমান্তবর্তী এই জেলাটিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন শীত আরও কয়েক দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার যশোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ থেকে দুই দফা শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় যশোরের ওপর দিয়ে। দুইদিন পর গত পরশু মঙ্গলবার রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া থাকাতে খানিকটা হলেও স্বস্তি ফেরে জীবন যাপনে। কিন্তু আবারও গত দুইদিন ধরে মেঘে লুকিয়ে যায় সূর্য। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃহস্পতিবার শীতের মধ্যে বৃষ্টি নামে। দিনভর কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডা বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে জেলার ছিন্নমূল মানুষগুলোকে।

শামসুর রহমান নামে এক এনজিও কর্মকর্তা বলেন, ‘একে তো তীব্র শীত, তার ওপর আবার বৃষ্টি। দু’য়ে মিলে স্বাভাবিক কাজকর্ম যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। ছেলে-মেয়েদের স্কুল, অফিসে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে’। 

শহরের মুজিব সড়কে কথা হয় ইজিবাইক চালক নজরুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভোরে শীতের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। তার সঙ্গে বাতাস তো আছে। বৃষ্টি ও শীতের কারণে ইজিবাইক চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’ মিজানুর রহমান নামে এক পথচারী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে বৃষ্টিতে আজ শীতের তীব্রতা একটু বেশি। হাত পা শীতল হয়ে গেছে। গরম কাপড়ের সঙ্গে হাত মোজা, পায়ের মোজা পড়লেও স্বস্তি মিলছে না। 

আক্কাস আলী নামে এক রিকশাচালক বলেন, ‘তিনটি শার্ট, দুটি প্যান্ট ও মোজা পড়ছি। সেই সঙ্গে মাফলার ও মাথায় টুপি দিয়ে কান মুখ ঢেকে রেখেছি। এরপরও শীতে কাবু হয়ে যাচ্ছি। রিকশা চালিয়ে এক ট্রিপ দিলে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে এত শীতের মধ্যেও বের হতে হয়েছে। 

এদিকে, শীতের প্রকোপে রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে অসুস্থ শিশুদের চাপও বেড়েছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ৭০-৮০ ভাগই শীতজনিত কারণে অসুস্থ। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম জানান, জেলার অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য ৬১ হাজার কম্বল বরাদ্দ ছিল তার মধ্যে ৫৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৭৫ হাজার কম্বলের চাহিদার কথা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। সরকারি কম্বল ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কম্বল বিতরণ করছে। তবে সেটা অনেক কম। তাই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনকে শীতার্ত মানুষের মাঝে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন

×