ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

মালয়েশিয়ায় ১০৪ যুবক আটক, থানায় মামলা

মালয়েশিয়ায় ১০৪ যুবক আটক, থানায় মামলা

প্রতীকী ছবি

মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২০:৫৪

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ১০৪ যুবক আটক হয়েছেন। দেশটির সালাক সালাতন নামে একটি ক্যাম্প থেকে বুধবার তাদের হেফাজতে নিয়েছে স্থানীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৯০ জন মেহেরপুরের। এ ঘটনায় গাংনী থানায় বৃহস্পতিবার একটি মানবপাচার মামলা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছে ভুক্তভোগী যুবকদের পরিবার।

মামলার প্রধান বাদী গাংনীর সাহেবনগর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন। তার সঙ্গে পক্ষভুক্ত হয়েছেন উপজেলার ব্রজপুর গ্রামের নুর ইসলাম, কল্যাণপুর গ্রামের ওবায়দুল্লাহ, আবদুল মজিদ, রফিকুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম ও আতিয়ার রহমান। এতে বিবাদী করা হয়েছে মুছা ইন্টারন্যাশল নামে একটি আদম ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক সাহেবনগর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার মুসা কলিম, একই গ্রামের সুরজের ছেলে আবদুল আওয়াল, আবদুল হাদি, রঞ্জিত মণ্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলাম, নুর ইসলামের ছেলে হাসানুজ্জামান, নুর মোহাম্মদের ছেলে আরিফুল ইসলামকে। 

মামলার তথ্য নিশ্চিত করে গাংনী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মনোজিত কুমার নন্দী বলেন, মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবো। পুলিশের একাধিক দল ইতোমধ্যে মানব পাচারকারীদের সন্ধানে নেমে পড়েছে। আশা করি, শিগগিরই ভাল খবর দেওয়া যাবে।

প্রধান বাদী মোফাজ্জল বলেন, আসামিরা আমাদের প্রতিবেশী। তারা দীর্ঘদিন ধরে আদম ব্যবসা করে আসছিল। এলাকার মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তারা অন্তত দেড়শ তরুণ-যুবকের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছে। ভাল কাজ দেওয়ার প্রলোভনে এই বেকার ছেলেদের পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্ম ঠিক করে দেওয়াতো দূরের কথা চার মাস ধরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় একটি বিদ্যুতহীন কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে। খাবারও দেওয়া হচ্ছে না। তারা কোনো রকমে লুকিয়ে ফোন করে আমাদের জানানোয় আমরা টাকা পাঠাই। এতে তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। এতদিনে দেশটির পুলিশ তাদের খুঁজে পেয়েছে।
আবদুল মজিদ বলেন, আমার ছেলেসহ অন্যরা মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। তাদের আটক করায় অন্তত নির্যাতন থেকে রক্ষা হয়েছে। এখন দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রশাসনের কাছে আমাদের কষ্টার্জিত টাকাগুলো উদ্ধার করে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আদম ব্যাপারী ও মামলার বিবাদীদের মোবাইল ফোনে কল দিলে তাদের নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের বাড়িতে গেলে জানা যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা বেশ কিছুদিন আগে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। 

মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এস.এম নাজমুল হক জানান, আমরা আটক যুবকদের ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবরারগুলোর পাশে থাকার বিষয়ে কাজ করছি। একই সঙ্গে তাদের টাকাগুলো কীভাবে তুলে দেওয়া যায় সে বিষয়ে তৎপরতা চলছে।

জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি আর যেন কেউ আদম ব্যাপারীর খপ্পরে না পড়েন, প্রতারিত না হন- সে বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×