ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বগুড়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি বাড়ল ৬২ ঘণ্টা

বগুড়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি বাড়ল ৬২ ঘণ্টা

শজিমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধন। ছবি: সমকাল

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৪ | ১৫:৩২

বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দাবিতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দ্বিতীয় দফায় ৬২ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২টার পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবেন। দাবি-দাওয়া আদায় না হওয়ায় সোমবার রাত ৮টার পর থেকে তাদের দ্বিতীয় দফা এই কর্মবিরতি শুরু হয়। 

এর আগে, শনিবার রাত ৮টা থেকে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা চার দাবিতে তাদের প্রথম দফার ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার করা এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাসিক ভাতা ৩০ হাজার টাকা করা। এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করা, বিএসএমএমইউয়ের অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ভাতা পুনরায় চালু করা এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন সংসদে পাস ও বাস্তবায়ন করা। 

এদিকে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শজিমেক হাসপাতালে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলনে নামেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে তারা এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে শজিমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. তৌফিক হাসান নিশাত বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী পাঁচ বছর কঠোর পরিশ্রম করে চিকিৎসক হওয়ার পর রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্ন করে থাকেন। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৫ হাজার টাকা ভাতা একরকম তামাশা। একজন চিকিৎসক এই টাকা দিয়ে নিজের খরচ চালাবে নাকি পরিবারকে সহযোগিতা করবে? হাসপাতালের আউট ডোর-ইনডোর সবখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দিনরাত পরিশ্রম করেন। তাদের ন্যূনতম ভাতা থেকে বঞ্চিত করা হবে কেন? তাই অবিলম্বে ইন্টার্নদের বেতন ভাতা ৩০ হাজার টাকা করাসহ অন্যান্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’ 

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ১৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। সকাল-বিকেল ও রাতের তিন শিফটে তারা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন। 

এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন না করায় শজিমেক হাসপাতালে রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসকরা নানা কারণে ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন। শনিবার রাতের পর থেকে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর পর একজন চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যেন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বগুড়া শহরের নিশিন্দারা এলাকার বাসিন্দা হোসেন আলী (৫৭) ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শজিমেক হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। ৬ দিন আগে ভর্তি হওয়া এ রোগীর ছেলে আক্কাস আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রয়োজনে সব সময় চিকিৎসক পেয়েছি। এরপর থেকে চিকিৎসকদের দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে। 

শজিমেক হাসপাতালে ২৮টি ওয়ার্ডে ১ হাজার ২৫০ শয্যা রয়েছে। বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২২০ জন। 

বগুড়া শজিমেক ও হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘হাসপাতালের শয্যার চেয়ে তিনগুণ রোগী বেশি থাকে। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের যে জনবল আছে তাই নিয়ে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন

×