জীবিকার তাগিদে বোরো মাঠে নারী চা শ্রমিকরা

চুনারুঘাটে বোরোজমিতে ধান রোপনে ব্যস্ত চা বাগানের নারী শ্রমিকরা সমকাল
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৪ | ২২:২০
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় এবার বেড়েছে বোরো আবাদ ও ফসল অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা। সেই সঙ্গে সেখানকার বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চা বাগানের নারী বোরো চাষিরা।
গত মৌসুমে বোরোর আবাদ ভালো হওয়ায় এবার স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বোরো চাষের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলার আহম্মদাবাদ, গাজীপুর, গোবরখলা, ছনখলা, চেগানগর ও আহম্মদাবাদ; সদর ইউনিয়নের নরপতি, চুরতা, সিরিকান্দি, শানখলা, হাসারগাঁও, ৭ নম্বর উবাহাটাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকদের বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে বোরো আবাদের ধুম পড়ে গেছে। অনুকূল আবহাওয়া ও সেচ সুবিধা থাকায় কৃষকরা এবার বেশিই ঝুঁকেছেন বোরো আবাদে। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে নেমেছেন চা বাগানের নারীরাও।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নারী চাষিদের অংশগ্রহণ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এতে জমি আবাদে পুরুষরা পরিবারের নারীদের সহায়তা পাচ্ছেন। পাশাপাশি বাগানে কাজ করা অনেক নারী চা শ্রমিক বোরো জমিতে চাষাবাদের কাজ করে বাড়তি টাকা উপার্জনের পথ খুলছেন।
চা বাগানের অমিতা কালিন্দী জানান, তাঁর পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬। দ্রব্যমূল্যের যে পরিস্থিতি তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সেজন্যই বোরো জমিতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান থেকে নারী চা শ্রমিকরা চুক্তির ভিত্তিতে এসে কাজ করছেন এখানকার বিভিন্ন বোরো জমিতে। বিঘাপ্রতি জমিতে ধানের চারা রোপণের কাজে তাদের মজুরি মেলে ১ হাজার ৭০০ টাকা। আবার ৪০০ টাকা দৈনিক মজুরিতেও কাজ করেন অনেকে। এভাবে এক-একটি গ্রুপে ১০ জন করে শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করেন।
স্থানীয় পর্যায়ে বোরো চাষাবাদে বর্তমানে পুরুষের চেয়ে নারীর চাহিদা একটু বেশি বলেও জানা গেছে। মাঠে কর্মরত মধ্যবয়সী সরস্বতী দাশ, মিনা ঝড়া ও বীথিকা ঝড়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে চারা রোপণের মজুরি অনেকেই ১ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে থাকে। চারজন নারী মিলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোপণ করতে পারেন দুই বিঘা। সেই হিসাবে প্রতিজন নারীর প্রতিদিনকার রোজগার প্রায় ৪০০ টাকা। তারা আরও জানান, বোরো ও আমনের মৌসুমে প্রায় চার মাস নারীরা মাঠে কাজ করেন। বছরের অন্য দিনগুলোতে মাটি কাটা, জমির আগাছা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করেন। এসব কাজে পুরুষের তুলনায় মজুরি কিছু কম হলেও এই আয় নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। সময়ের সঙ্গে অনেক নারী সরাসরি বোরো চাষাবাদে যুক্তও হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো হয়েছে।
- বিষয় :
- বোরো