চালের বস্তায় ৭ তথ্য নিশ্চিত করতে হবে মিলারদের

ছবি: সমকাল
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:০১
বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে সরকারের দেওয়া দামের চেয়েও বেশি দামে ধান কেনাবেচা হয়। এতে বাজারে চালের দাম বাড়ে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে সরকার। আগামী পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে বাজারজাতকৃত চালের বস্তায় ৭ তথ্য নিশ্চিত করতে হবে মিলারদের। নয়তো জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আনা হবে তাদের।
বুধবার দুপুরে বগুড়া জেলা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাইস মিল থেকে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরবরাহকৃত চালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও সরবরাহ মূল্য সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
বাজারে সরবরাহকৃত প্রতিটি চালের বস্তায় যেসব তথ্য নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- বস্তায় ধানের জাতের নাম, প্রস্তুতকারক, ঠিকানা, জেলা, নিট ওজন, উৎপাদনের তারিখ ও মিল গেট মূল্য লেখা থাকতে হবে। এই ৭ তথ্য না পেলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে রাইস মিল মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সভায় অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৭ তথ্য নিশ্চিত করতে পারলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়াও মিল মালিকেরা চাইলে বস্তার গায়ে খুচরা মূল্য লিখে দিতে পারবে। এতে করে অসাধু কোনো ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুত করে দাম বাড়াতে পারবেন না।
সদর উপজেলার মিল মালিক আবু সাঈদ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে। বড় বড় কোম্পানির মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ায়, তাদের নাম সামনে আসে না। শুধু মিল মালিকদের নাম সামনে আসে।
এছাড়াও পাটের বস্তায় চাল বিক্রি নিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, মাত্র ৩০ টাকায় প্লাস্টিকের বস্তা কিনতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে পাটের বস্তার দাম অন্তত ৫ গুণ বেশি। এ জন্য পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বিক্রি করা হলে ব্যবসায়ীদের খরচ কমে আসতো।
তবে এই দাবি নাকচ করে দিয়ে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, আইনের বাহিরে গিয়ে কোনো কিছু করা সুযোগ নেই। প্লাস্টিকের বস্তা আমাদের পরিবেশের জন্য হুমকি।
তিনি আরও বলেন, রাইস মিল ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পহেলা বৈশাখ থেকেই সরকারি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। জেলা প্রশাসনের মনিটরিং দল মাঠে থাকবে। অনিয়ম পাওয়া গেলেই
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, পাটের বস্তায় সাতটি বিষয় লিখতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন আইন ২০২৩ এ বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে একই আইনের ধারা ৬ ও ৭ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে বগুড়ার সব ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করবেন।
সভায় বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। চাল নিয়ে যেন কোনো
কারসাজি না হয় সেজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি গোয়েন্দা মনিটরিং চলমান থাকবে। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে মিল গেটেই চালের বস্তায় ধানের জাতের নাম, মূল্যসহ আরও কয়েকটি বিষয় লিখে দিতে বলা হয়েছে। এগুলো যারা উল্লেখ করবে না তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
- বিষয় :
- বগুড়া
- চালের বাজার