জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে আলোর পাঠশালা

কুলাউড়া রেলস্টেশনে আলোর পাঠশালায় চলছে ছিন্নমূল পথশিশুদের পাঠদান সমকাল
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | ২২:৩০
কেউ ভিক্ষা করে, কেউ বা কাগজ কুড়ায়। বেশির ভাগ শিশুরই নেই বাবা-মা। কারও মা আছে তো, বাবা নেই। অনেকের আবার এর কিছুই জানা নেই।
কুলাউড়ার এমন ছিন্নমূল পথশিশুদের জন্য আলো হয়ে এসেছে আলোর পাঠশালা। সুবিধাবঞ্চিত শিশুও রয়েছে। প্রতি শুক্রবার সবাইকে পড়ানো হয়। এ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। কিছু স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থী এ উদ্যোগটি নেন।
কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফর্মে এ পাঠশালাটির কার্যক্রম শুরু হয় প্রায় ৬ বছর আগে, নাম দেওয়া হয়েছে আলোর পাঠশালা। এসো খেলার ছলে পড়ি, নিজেকে গড়ি– এই স্লোগান নিয়ে আলোর পাঠশালা যাত্রা শুরু করে ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। মাঝে করোনার কারণে স্থবিরতার পর নতুন উদ্যমে চালু হয় পাঠশালাটি। যারা শুরু করেছিলেন তাদের অনেকেই পাড়ি জমিয়েছেন ইউরোপ ও আমেরিকায়। পরে আলোর পাঠশালার পথচলা আরও দুর্বার হয়েছে। যারা দেশের বাইরে গেছেন তারা এটি চালিয়ে নেওয়ার জন্য হয়ে উঠেছেন এক একজন দাতা সদস্য।
বর্তমানে পাঠশালার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০ জন। তাদের পাঠদানের জন্য রয়েছেন ১৫ জন শিক্ষক। প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচজন পাঠদানে উপস্থিত থাকেন। বেলা আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত সরকারি বই পাঠ্যসূচি অনুসারে চলে পাঠদান। যারা পাঠদান করেন তারা কোনো টাকা পয়সা নেন না, সাপ্তাহিক চাঁদা দেন। এ টাকায় প্রতি সপ্তাহে শিশুদের আপ্যায়ন করানো হয়। বিভিন্ন দাতা আলোর পাঠশালাকে এগিয়ে নিতে স্কুলব্যাগ, ড্রেস ও খাবার দিয়ে অনুপ্রাণিত করেন।
পাঠদানের সঙ্গে জড়িত ইয়াছিনুর রহমান নাঈম জানান, চলতি বছর পাঁচজন শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিদায়ী শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগ, সার্টিফিকেট, খাতা-কলম এবং স্কুলের টি-শার্ট উপহার দেওয়া হয়। এছাড়াও নতুন বছর উপলক্ষে সব শিক্ষার্থীর মাঝে খাতা-কলম বিতরণ করা হয়।
স্টেশনমাস্টার রুমান আহমদ জানান, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শিক্ষামূলক সংগঠন আলোর পাঠশালা তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। রেলস্টেশনকেন্দ্রিক অনেক পথশিশুর শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক।
- বিষয় :
- সুবিধা বঞ্চিত শিশু