ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শোলাকিয়ায় চলছে ঈদের প্রস্তুতি

শোলাকিয়ায় চলছে ঈদের প্রস্তুতি

ছবি- সমকাল

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫:৩১ | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫:৪৭

কিশোরগঞ্জের ২৭৪ বছরের পুরোনো ও বহুল আলোচিত শোলাকিয়া ঈদগাহ এ বছরের ঈদুল ফিতরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এর নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহ অঞ্চলের সিইও মহিবুদ্দিন খন্দকার আজ রোববার শোলাকিয়া ঈদগাহে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহ অঞ্চলের সিইও মহিবুদ্দিন খন্দকার বলেছেন, ঈদের দিনের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। র‍্যাবের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি মোটর সাইকেলেও বিশেষ টহলের ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ঈদগাহে ওয়াচ টাওয়ারও রাখা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানিয়েছেন, ঈদগাকে কেন্দ্র করে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকবে বাইনোকুলার, থাকবে ড্রোন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরসহ পুলিশের অনেকগুলো চেকপোস্ট। থাকবে বোমা ডিসপোজাল টিম।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন এখানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সেদিনের হামলায় দুজন পুলিশ সদস্য ও একজন গৃহবধূ নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য। পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে একজন জঙ্গি সদস্যও নিহত হয়েছিলেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, বরাবরের মত এবারও দূরবর্তী মুসল্লিদের ঈদ জামাতে যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদের দিন ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। দূর থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এবার পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ঈদের দুদিন আগেই নামাজের জন্য মাঠের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি ধারণা দিয়েছেন। 

জেলা প্রশাসক জানান, এবার জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন নিয়মিত ইমাম বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। উল্লেখ্য, ১৭৫০ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই ঈদগাহর। তবে ১৮২৮ সালে প্রথম আনুমানিক সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই থেকেই এই ঈদগাসহ পুরো এলাকার নামকরণ হয়েছে ‘শোলাকিয়া।’ 

১৮২৮ সাল থেকে জামাত গণনায় এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭তম জামাত। এখানে এখন প্রতি বছর দেশের নানা প্রান্তের প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। মূল ঈদগাহ ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তা, নদীর সেতু, নদীর পাড়, পতিত জমি আর বাসাবাড়ির আঙিনা মুসল্লিতে ভরে গিয়ে এক জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে ওঠে।

শোলাকিয়ার একটি বিরল ঐতিহ্য হচ্ছে গুলি ফুটিয়ে জামাত শুরু। জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে তিনটি, ১০ মিনিট আগে দুটি এবং ৫ মিনিট আগে একটি শটগানের গুলি ফুটিয়ে নামাজের সংকেত দেয়া হয়।

আরও পড়ুন

×