ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সেই রমিজের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, পরিবারের কাছে হস্তান্তর

সেই রমিজের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, পরিবারের কাছে হস্তান্তর

রমিজ মিয়া

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ২১:১০ | আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ২১:১২

তাহিরপুর সীমান্তে পুলিশের ধাওয়ার সময় নিহত রমিজ মিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ওই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। তবে তদন্তের তথ্য সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি। পরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রমিজ মিয়ার পরিবারের দাবি, পুলিশ সদস্যদের আঘাতেই রমিজের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, আসামি শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন। আঘাতের কোনো চিহ্ন তাঁর শরীরে ছিল না।

বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য রমিজ মিয়ার লাশ নিয়ে এলে, ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডে ছিলেন সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) বিষ্ণুপ্রসাদ চন্দ, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রফিকুল ইসলাম এবং জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন।

আরএমও রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।

রমিজ মিয়ার মৃত্যুতে মেয়ে সুরিয়া বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন

ঘটনার ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় তাহিরপুর সীমান্তের উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বুরুঙ্গাছড়া গ্রামে পুলিশ দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পরোয়ানাভুক্ত আসামি রমিজ মিয়া। পুলিশও ধাওয়া দেয় তাঁকে। এ সময় একজন পুলিশ সদস্য নারকেলের ডাগুয়া দিয়ে পেছন থেকে রমিজকে আঘাত করেন। এর কিছু সময় পর মারা যান তিনি।

ঘটনাস্থলে থাকা তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পার্শ্ববর্তী বড়ছড়া গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন রাতেই সাংবাদিকদের জানান, তাহিরপুর থানার এএসআই জিয়া উদ্দিন বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের মামলার আসামি রমিজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে যান। পুলিশ দেখে আসামি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় নারকেলের ডাগুয়া দিয়ে আসামির পিঠে আঘাত করেন এক পুলিশ সদস্য। তাৎক্ষণিক নাক-মুখ দিয়ে রক্ত আসে আসামির এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর তাঁর মৃত্যু হয়।

রমিজ মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া জানান, সাদা পোশাকে দু’জন পুলিশ সদস্য তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করতে আসেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁর বাবা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া করতে থাকা এক পুলিশ সদস্য পেছন থেকে আঘাত করেন। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁর বাবা রমিজ। পুলিশের সঙ্গে থাকা তাদের মোটরসাইকেল চালক এ সময় চিৎকার দিয়ে বলেন, আসামি তো মারা গেছেন। তখন পুলিশ তাঁর বাবাকে ফেলে চলে যায়।

তাহিরপুর থানার ওসি জানান, রমিজ উদ্দিন সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও চোরাচালানের ৭টি মামলা রয়েছে। ২০২০ সালের আগের একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ।

ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্‌ গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি দৌড়ে পালিয়ে যান। তখন পুলিশ তাঁর পিছু পিছু গেলেও এলাকার লোকজনের বাধা পেয়ে চলে আসে। কোনো আঘাতের চিহ্ন বা আলামত ভিকটিমের শরীরে পাওয়া যায়নি। এরপরও বিষয়টি নিশ্চিত হতে রমিজ মিয়ার লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন

×