ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বাজার থেকে ডেকে নিয়ে হরিণ শিকারের মামলা!

বাজার থেকে ডেকে নিয়ে হরিণ শিকারের মামলা!

ফাইল ছবি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ২২:০০ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ২২:০০

বাগেরহাটের শরণখোলায় বাজার থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে হরিণ শিকারের মামলায় আটকের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় মো. জুয়েল নামে ওই যুবককে শরণখোলা বাজারের একটি চায়ের দোকান থেকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মাহাবুব হোসেন ডেকে নেন বলে স্থানীয়রা জানান। পরদিন হরিণ শিকারের অভিযোগে তাঁকে আটক দেখানো হয়।

পরিবারের অভিযোগ, বনে প্রবেশে অতিরিক্ত ফি আদায়ের কারণ জানতে চাওয়ায় জুয়েলকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। আর বন বিভাগ বলছে, চরখালী টহল ফাঁড়ির কাছে অভয়ারণ্যে হরিণ শিকারের ১৫০ ফুট জালসহ জুয়েলকে আটক করা হয়েছে। আরও দুই শিকারিকে নিয়ে বনে ফাঁদ পেতেছিলেন জুয়েল। অভিযানের সময় জুয়েলের দুই সঙ্গী পালিয়ে যায়। আজ জুয়েলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আটক জুয়েল ঢাকার ডেমরার মো. জলালের ছেলে। ঈদের আগের দিন তিনি শরণখোলার খুড়িয়াখালী গ্রামে শ্বশুরবাড়ি আসেন।

জুয়েলের স্ত্রী সাথী বেগম বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি এসেছি। জুয়েল বনে যেতে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলেছিল। কিন্তু বনে প্রবেশের ফি বেশি হওয়ায় সে এসিএফকে কয়েকবার ফোন দেয়। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি বাজার থেকে জুয়েলকে ধরে নিয়ে যান।’ 

সাথী আরও বলেন, ‘আমার স্বামী বাজারে যাওয়ার সময় টি-শার্ট ও ট্রাউজার পরে ছিল। কিন্তু তাকে আদালতে নেওয়ার সময় পুরাতন লুঙ্গি পরিয়ে নিয়ে গেছে। তার মুখে মারের দাগ। শুনেছি, অনেকে মেরেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’

জুয়েলের শ্বশুর বাদশা হাওলাদার বলেন, ‘মেয়ে-জামাই ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে এসেছে। ফিরে যাওয়ার আগে বনে ঘুরতে যেতে চায়। কিন্তু ফি বেশি মনে হওয়ায় কী মনে করে যেন এসিএফ স্যারকে ফোন দেয় জামাই। ফোনে একটু কথা কাটাকাটি হওয়ায় জামাইকে ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে দিয়ে দিছে।’

স্থানীয় রিয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বাজারে একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় এসিএফ স্যার দোকানের সামনে এসে জুয়েলকে ডেকে নিয়ে যান। এর পর শুনি, তাকে হরিণ শিকারের ফাঁদসহ আটক করা হয়েছে।’

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজীব বলেন, ‘জুয়েলের শ্বশুর আমাকে জানান, তাঁর জামাতাকে বন বিভাগের লোকজন ধরে নিয়ে গেছে। আমি রাতেই বন বিভাগের অফিসে যাই। সহকারী বন সংরক্ষক জানান, ফোনে অশোভন আচরণ করেছে জুয়েল।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ মাহাবুব হোসেন বলেন, ‘চরখালী ক্যাম্পের বনরক্ষীরা এক শিকারিকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছে। আমাকে তারা বিষয়টি জানিয়েছে। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই। অপরাধী ছাড়া কাউকে আটক করা হয় না।’ 

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করীম বলেন, ‘এক যুবককে আটকের বিষয়টি শুনেছি। তবে মিথ্যা মামলা বা মারধর করা হয়েছে– এমন অভিযোগ আসেনি।’

আরও পড়ুন

×