নলুয়ার হাওরে সোনারঙা বোরোর ঝিলিক

জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওরে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক। ছবিটি শনিবার তোলা সমকাল
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:১০
বোরো ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন বুনছেন জগন্নাথপুরের কৃষকরা। বিশেষ করে নলুয়ার হাওরে সোনারঙা ধানের হাসি চোখে পড়ছে। পাকা ও আধাপাকা সোনা রঙের ধানে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। তারা বলছেন, এবার প্রতি কিয়ার (৩০ শতক) জমিতে ২০ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়া যাবে।
গতকাল রোববার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাতাসে দুলছে বোরো ফসলের পাকা শিষ। এরই মধ্যে বেশকিছু এলাকায় শুরু হয়েছে ধান কাটা। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, গত ৫০ বছরেও এমন ভালো ফলন হয়নি। এ বছর যে ফসল হয়েছে তাতে সবাই খুশি। ধান পাকতেও শুরু করেছে আগেভাগে। এখন ভালোভাবে সে ফসল ঘরে তুলতে সর্বাত্মক সহায়তা চান তারা।
হাওরের বেশির ভাগ কৃষক জানান, ২০১৭ সালের অকালবন্যায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে হাওরে ফসলডুবির ঘটনা ঘটে। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও তাড়া করে তাদের। এরপর প্রায় প্রতি মৌসুমেই অতিবৃষ্টি, খরা ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছিল। এবার সে আশঙ্কা নেই। তবে শ্রমিক সংকট নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তারা।
নলুয়া হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান জানান, এবার খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। প্রতি কিয়ার জমিতে অন্তত ২০-২৫ মণ ধান পাওয়া যাবে। ফলনে সবাই খুব খুশি। তবে শ্রমিক সংকট নিয়ে চিন্তিত। জমিতে পানি থাকায় ধান কাটার মেশিন কাজ করছে না। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ১০-১২ দিন এ রকম থাকলেই নিশ্চিন্তে ফসল ঘরে তোলা যাবে।
স্থানীয় কৃষক সুলতান মিয়া জানান, প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলন হয়েছে। এবার ২০ কিয়ার জমি চাষ করেছেন। এর মধ্যে পাঁচ কিয়ার জমির ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন।
নলুয়া হাওরবেষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। গত ৫০ বছরেও এত ফলন হয়নি।
হাওর বাঁচাও জগন্নাথপুর উপজেলা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব জানান, হাওরে শ্রমিক সংকট ও পর্যাপ্ত কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন না থাকায় ধান কাটার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিলে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, জগন্নাথপুরের নলুয়া, মইয়াম, পিংলার হাওরসহ ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউসার আহমদ জানান, হাওরে এরই মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার ফলন খুবই ভালো। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট নেই বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা। তিনি জানান, জগন্নাথপুরের সবকটি হাওরে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। পাশাপাশি ৭৫টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে চলছে ধান কাটার কাজ।
- বিষয় :
- বোরো