ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে না চাওয়ায় রোগীর স্বজনকে মারধর

বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে না চাওয়ায় রোগীর স্বজনকে মারধর

ফাইল ছবি

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪ | ০৮:৪৪

বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে রাজি না হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের নির্দেশে মারধর করা হয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল ফোনও। পরে মারধরের শিকার ব্যক্তি ভয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।

রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ওই রোগীর স্ত্রী তার স্বামীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান। পরে অবশ্য পরিচালকের আশ্বাসে তাদের ফিরিয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোগীর স্বজনরা জানান, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইয়াজউদ্দিন আলী প্রামানিক বাবু (৪৭) বুকে তীব্র ব্যথা নিয়ে রোববার বিকেল ৫টায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর তাকে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়া হলে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া জানান, রোগীর বুকে ডান পাশে রক্তনালীতে ব্লক পাওয়া গেছে। এজন্য জরুরিভিত্তিতে তাকে ইনজেকশন দিতে হবে।

ওই চিকিৎসক রোগীর ভাগ্নেকে বলেন, ইনজেকশনটির দাম প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। তারা ইনজেকশনটি দিতে চাইলে তিনি কোম্পানির লোককে ডাকবেন। কিন্তু রোগীর ভাগ্নে তাতে অস্বীকৃতি জানান।

এদিকে দেলোয়ার নামে রোগীর ওই ভাগ্নে তার পরিচিত সাংবাদিক বুলবুল হাবিবকে ফোন করে বিষয়টি জানান। বুলবুল হাবিব বিষয়টি জানার জন্য হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুস সাঈদকে ফোন দেন। ডা. জাহিদুস সাঈদ তাকে জানান, এ ধরনের ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়, যেটার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ। তবে বাইরের ইনজেকশনটা আরেকটু আপগ্রেডেড। সেটার কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ। তবে রোগীর যেটা পছন্দ, তাকে সেই ইনজেকশন দেওয়া হয়।

সব শুনে ডা. জাহিদুস সাঈদ ডা.সিনথিয়াকে হাসপাতাল থেকে সরবরাহকৃত ইনজেকশন দিতে বলেন। কিন্তু বিভাগীয় প্রধানের কাছে অভিযোগ করায় ওই চিকিৎসক ক্ষুব্ধ হয়ে রোগীর ভাগ্নে দেলোয়ারকে বের করে দেওয়ার জন্য হাসপাতালের কর্মীদের নির্দেশ দেন। এরপর কয়েকজন কর্মী মারধর শুরু করলে দেলোয়ার হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।

এর আগে দেলোয়ারের ফোন কেড়ে নিয়ে ডা. সিনথিয়া বুলবুল হাবিব নামে ওই সাংবাদিককে ফোন দিয়ে গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয় বলেও জানা গেছে।

এ ঘটনার পর দেলোয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের হাসপাতালে ফিরে যেতে বলেন। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা আবার রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ফেরত যান।

রামেকের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক জাহিদুস সাঈদ বলেন, হাসপাতালে নির্ধারিত ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তবে এর চেয়ে ভালো ওষুধ বাইরে পাওয়া যায়। ওই চিকিৎসকের উচিত ছিল রোগীর স্বজনদের বিষয়টি জানানো।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহমেদ বলেন, তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন এবং ওই রোগীর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করবেন।

এসব বিষয়ে ডা. সিনথিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

আরও পড়ুন

×