বেলকুচিতে পৌর মেয়রকে পেটালেন এমপির এপিএস ও তাঁর দলবল

আলহাজ সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি: সমকাল
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪ | ২২:৪৭
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভা মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজাকে পিটিয়ে আহত করেছেন স্থানীয় এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের এপিএস সেলিম সরকার ও তাঁর দলবল। বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার চালা এলাকায় আলহাজ সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। হামলার সময় মেয়রের দুই বছর বয়সী ছেলে ফারিয়েল হকও আহত হয়।
স্থানীয়রা জানান, হামলার ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে সেলিম সরকারের লোকজনের হাতে লাঞ্ছিত হন সাংবাদিক আবু মুসা ও পৌরসভার কর্মচারী নাবিন মণ্ডল। হামলাকারীদের সঙ্গে মেয়র রেজার ধস্তাধস্তির সময় তাঁর ছেলে ফারিয়েল মোটরবাইক থেকে পড়ে যায়। এ সময় শিশুটির শরীরেও কিলঘুসি লাগে। ছবি তোলায় কেড়ে নেওয়া হয় মুসা ও নাবিনের ফোন। নাবিন ও ফারিয়েলকে বেলকুচি উপজেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মেয়র রেজা বলেন, বেলকুচির আলহাজ সিদ্দিক হাই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। দ্বাদশ সংসদ ও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রভাবে স্থানীয় এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের ইন্ধনে আমিনুল ইসলাম ও এপিএস সেলিমের নেত্বত্বে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড বরাবর আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ করে। অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন তদন্তে আসে। প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে বলা হলে আমি ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাই। এ সময় এমপির এপিএস সেলিম ও উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আমিনুল ইসলামের সমর্থক ইউসুফ আলী ও তাঁর ভাই আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় বেলকুচির থানার ওসিকে বারবার ফোন করে বলার পরও তিনি সাড়া দেননি। বাধ্য হয়ে পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি ডিবি পুলিশ পাঠান।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে এমপির এপিএস সেলিম সরকারের নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের এমপি আবদুল মমিন মণ্ডলও ফোন ধরেননি।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে বেলকুচি থানার ওসি মোহাম্মদ আনিছুর রহমানও কোনো মন্তব্য করেননি।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত ফোর্স এসেছে। সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।
পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের সঙ্গে ওসির ঘনিষ্ঠতা বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
বেলকুচির নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এমপির আশীর্বাদপুষ্ট বলে পরিচিত আমিনুল ইসলাম সরকার বলেন, আমি ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলাম। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমার মোবাইল ট্র্যাকিং করে দেখতে পারেন।