ঘূর্ণিঝড় রিমাল
জোয়ারের পানিতে প্লাবিত বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চলসহ সুন্দরবন

ছবি: সমকাল
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪ | ১৮:০১
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের সকল নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। রোববার দুপুরে জোয়ারে নদীর পানি বাড়ার ফলে তীরবর্তী বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে।
এদিকে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে গোটা সুন্দরবন। করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও দুপুরের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এতে এখনও বন্যপ্রাণীর ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলার নদ-নদীর পানি সর্বোচ্চ পাঁচ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় যদি সন্ধ্যায় আঘাত আনে তখন নদীতে ভাটি থাকায় জলোচ্ছ্বাসের বড় ক্ষতির সংখ্যা কম।
তবে ঘূর্ণিঝড় শুরুর আগেই রোববার দুপুরে জেলা সদরের মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার নদীর তীরবর্তী অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বাগেরহাট সদরের দাড়াটানা সেতু সংলগ্ন এলাকার লুইস বিশ্বাস ফরাজী বলেন, মারিয়া পল্লী ও পাশের দড়াটানা নদীর তীরবর্তী এই এলাকায় দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস। দুপুরের জোয়ারে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে তাদের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে।
পশুর নদের চিলা এলাকার একরাম সরদার বলেন, ‘বৃষ্টির সঙ্গে আস্তে আস্তে বাতাসও বাড়ছে। পোলাপান নিয়ে কি যে করব। আমাগো বেশি ভালো ঘর না। ঝড়ে কী উপায় হবে, আল্লাহ জানে।’
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি রোববার দুপুরে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সবচেয়ে বেশি পানি বেড়েছে জেলার মোংলা উপজেলার পশুর নদে। মোংলা বন্দরের এই নদে দুপুরে বিপদসীমার ৫ ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। আর বলেশ্বর ও ভৈরব নদে বিপদসীমার দুই থেকে তিন ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির সমকালকে বলেন, দুপুরে জোয়ারে বনের করমজল কেন্দ্রসহ বেশিরভাগ বনভূমি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এখনও কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগের সব স্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।