উপজেলা নির্বাচন
ফল প্রত্যাখ্যান করে ভাঙ্গায় ফের ভোটের দাবি

ছবি- সমকাল
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪ | ১৯:৫২
সদ্য সমাপ্ত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটের দাবি জানিয়েছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী মো. মোখলেছুর রহমান সুমন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রাতে নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন বলেও জানান পরাজিত ওই প্রার্থী।
মোখলেছুর রহমান সুমন বলেন, প্রকাশ্যে সিল মেরে ব্যাপক জালভোট, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রে অনিয়ম করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোট দিতে আসতে দেওয়া হয়নি। গুণ্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে আমার কর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরিফ মাতুব্বর নামে এক কর্মী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
তিনি বলেন, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রিজাইডিং অফিসারকে মারপিট করে টাকা লুট করে নিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকেরা। ভোটের আগের দিন তারা ২০ জন প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়ে গোপন মিটিং করেছে। আমরা রিটার্নিং অফিসারকে জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
এ সময় তিনি ঘোষিত ফলাফলে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের গণনাকৃত ভোটের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানের তথ্য তুলে ধরে বলেন, সবাই তো তিনটি করেই ব্যালট নিয়েছে। তাহলে চেয়ারম্যান ব্যালটের সাথে ভাইস চেয়ারম্যান ব্যালটের এত ব্যবধান কেন? বাকি ব্যালটগুলো কোথায় গেল? এতেই বোঝা যায়, কী পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে নির্বাচনে তুলনামূলক ভালো ভুমিকা দেখা গেলেও উপজেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিস পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। আমরা তাদের বারবার নানা অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগ দিলেও তারা আমলে নেয়নি। ভোটের দিন ১২টার দিকেও আমি চারটি কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগ জানিয়ে সেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছিলাম। তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। তাই আমি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মোখলেছুর রহমান সুমন বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রেই অনিয়ম করা হয়েছে। আমি পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। সেটি সম্ভব না হলে যে ১৭টি কেন্দ্রে বেশি কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে সেগুলোতে আবারও ভোটগ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আশা করছি নির্বাচন কমিশন আমার আবেদনে সাড়া দেবে।
প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে গত ২৯ মে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী কাউছার ভুঁইয়া ৬২ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোখলেছুর রহমান সুমন পান ৫০ হাজার ৮৩০ ভোট।
- বিষয় :
- উপজেলা নির্বাচন
- ভোটগ্রহণ
- সংবাদ সম্মেলন