দুই সপ্তাহে অর্ধশত গরু চুরি

প্রতীকী ছবি
এম তুষারী, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪ | ০০:০৯
অনেক কষ্ট করে তিনটি গরু লালন-পালন করেছিলেন বদুর উদ্দিন। ১ জুন রাতে গোয়ালে গরুগুলো রেখে বাইরে তালা দিয়ে ঘুমাতে যান। পরদিন সকালে দেখেন, কোনো গরুই গোয়ালে নেই। বদুরের বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের বাগানবাড়ি এলাকায়। ওই ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকা থেকে অর্ধশতাধিক গরু চুরির তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, চুরি আতঙ্কে তাদের রাতের ঘুম উধাও। মাসখানেক ধরে এমন অবস্থা চললেও অবস্থার উন্নতি নেই।
কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য চারটি গরু লালন-পালন করছিলেন মৌচাক ইউনিয়নের কালিয়াদহ গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন। মে মাসের শেষ সপ্তাহের এক রাতে সংঘবদ্ধ চোররা তাঁর সব গরু নিয়ে যায়। লোকমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে শনিবার বলেন, চুরি হওয়া চারটি গরুর আনুমানিক দাম সাত লাখ টাকা।
মধ্যপাড়া ইউনিয়নের বৈরাগীরচালার বাসিন্দা তুষার মিয়া বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রাম থেকে অর্ধশত গরু চুরি গেছে। এর মধ্যে ক্ষিতীশ চন্দ্রের প্রায় দেড় লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড়, জহিরুলের দুই লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড় রয়েছে। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলম ও সেলিনা বেগমের তিনটি করে; রওশন আলীর দুটি গরু চুরি করেছে সংঘবদ্ধ চক্র।
জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, কয়েক দিনের মধ্যে তাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রাম থেকে ৫০টির মতো গরু চুরি হয়েছে। কিন্তু চোর ধরা পড়ছে না। ফলে তাঁর মতো গরুর মালিকের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ফকিরচালা, লস্করচালা, রায়েরচালা, বড়ইবাড়ি, মধ্যপাড়া, বৈরাগীরচালা, মাটিকাটা ও পাশের ঢালাজোড়া ইউনিয়নের প্রায় প্রতি বাড়িতেই কোরবানি ঈদের জন্য চার-পাঁচটি করে গরু পালনের চল রয়েছে। ঈদে বিক্রি করে যে লাভ হয়, ওই টাকা দিয়ে পরের বছরের জন্য আবারও গরু কেনেন তারা। গরু চোরের উপদ্রব বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এসব গ্রামে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শনিবার বলেন, আগের তিন রাতে কামারচালা এলাকার আফাস উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনের চারটি, বাগানবাড়ির বদুর উদ্দিনের তিনটি গরু চুরি হয়ে গেছে। ঈদের আগে এভাবে গরু চুরি বৃদ্ধিতে মালিকরা আতঙ্কে রয়েছেন। রাত জেগে গোয়ালঘর পাহারা দিতে হচ্ছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে রাতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। গরু চুরি বন্ধে গ্রামের মানুষকে নিয়ে কাজ করছেন। বিভিন্ন এলাকায় পাহারায় পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীকে সম্পৃক্তও করা হয়েছে।
- বিষয় :
- গরু চোরকারবারী