যে সড়ক-মহাসড়কে চলতে হয় নাক চেপে

রাজবাড়ীর পাংশায় মহাসড়কের পাশে ভাগাড় সমকাল
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪ | ২৩:২৩
রাজবাড়ীর পাংশায় সড়ক ও মহাসড়কের পাশে রয়েছে দুটি ভাগাড়। ফলে দুর্গন্ধে প্রতিনিয়ত নাক চেপে চলতে হয় পথচারীদের। এখান থেকে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু। প্রায় চার বছর ধরে চলছে এ অবস্থা। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, জায়গাটি আবর্জনা ফেলার জন্যই অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এ মহাসড়ক ও সড়ক দিয়ে হাজারো যানবাহন চলাচল করে থাকে। পাংশা উপজেলা অফিসে বা শহরে ঢুকতে হলে এ সড়ক দিয়েই ঢুকতে হয়। বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। ভাগাড়ের কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সড়কের পাশ দিয়ে নাক চেপে যাচ্ছে সবাই। বছরের পর বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও এসব আবর্জনা অপসারণে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সম্প্রতি পাংশা উপজেলার কলেজ মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পাশাপাশি দুটি বড় ভাগাড়; যার একটি দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সত্যজিৎপুরে, অন্যটি কুড়াপাড়ায়। মহাসড়কের পাশে প্রায় দুইশ ফুট জায়গাজুড়ে আবর্জনার স্তূপ। আবর্জনা ফেলতে ফেলতে পাশের খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তার উত্তর দিকে কলেজ মোড় থেকে শহরের দিকে যে রাস্তাটি চলে গেছে তার পাশে আরও একটি ময়লার স্তূপ। সেখানে মাছি ভনভন করছে। কুকুর আবর্জনা ঘাঁটাঘাঁটি করছে। দুর্গন্ধে পেটের ভেতরে মোচড় দেওয়ার অবস্থা। এই ভাগাড়ের পেছনে একটি খাল, অন্যদিকে দোকানপাট, আরেক দিকে বসতবাড়ি। এই রাস্তা দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ চলাচল করে। যাওয়ার সময় নাক বন্ধ করে যায় তারা।
রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন শাজাহান আলী। তিনি পাংশা পৌর এলাকার বাসিন্দা। কলেজ মোড়ে ব্যবসা করেন। জানালেন, প্রতিনিয়ত তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পৌর কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার বলেও কোনো লাভ হয়নি। এখন আর বলেন না। দুর্ভোগ নিয়েই চলাচল করেন। তিনি ভাগাড়টি অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি জানান।
কুড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, গত চার বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এলাকাবাসী বহুবার অভিযোগ করেছে। কিছুতেই কিছু হয়নি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তাদের সমস্যার কথা কেউ শোনেও না দেখেও না। শুনেছেন জায়গাটি পৌরসভা কিনেছে।
মহাসড়কের পাশে যে ভাগাড়টি রয়েছে সেখানে চাষাবাদ করছিলেন অধীর বিশ্বাস। জানালেন, এখানে আগে বড় খাল ছিল। অনেক মাছ চাষ করা হতো। এখন আর তেমন মাছ চোখে পড়ে না। ময়লা ফেলতে ফেলতে খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে কৃষিজমিতে। ময়লার দুর্গন্ধে চাষাবাদ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
পাংশা পৌরসভার মেয়র ওয়াজেদ আলী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জায়গাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য জেলা শহরেও রাস্তার পাশে ভাগাড় আছে। পাংশায় ময়লা ফেলার জন্য উপযুক্ত জায়গা নেই। বাধ্য হয়েই সেখানে ময়লা ফেলা হয়। মাঝে মধ্যে তারা ময়লা-আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলেন। মানুষের খুব একটা দুর্ভোগ হয় না।
- বিষয় :
- রাস্তা পারাপার