চলন্ত ট্রেনে তরুণী ধর্ষণ
সেই রাতে কী ঘটেছিল উদয়ন এক্সপ্রেসে

ফাইল ছবি
আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪ | ০০:৫৪ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ | ০৯:৫৭
সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে টিকিট না পেয়ে খাবার বগিতে উঠেছিলেন ১৮ বছর বয়সী তরুণী। সেখানে প্রথমে উত্ত্যক্তের শিকার হন তিনি। এক পর্যায়ে ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী এসএ করপোরেশনের চার কর্মী রান্নাঘরে নিয়ে তাঁকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। যাতায়াতের নিরাপদ বাহন হিসেবে পরিচিত ট্রেনে এমন ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন রেলযাত্রীরা। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ট্রেনে দায়িত্বরত কর্মীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
চলন্ত ট্রেনে ধর্ষণের ঘটনায় দায় নিচ্ছে না রেলওয়ে পুলিশ ও কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে চলাচলরত দুটি ট্রেনে এসএ করপোরেশনের কার্যক্রম স্থগিত করেছে রেলওয়ে। ট্রেনের গার্ড আবদুর রহিমকে সাময়িক বরখাস্ত ও ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
ওই রাতে যা ঘটেছিল
পুলিশ ও তরুণীর ভাষ্য অনুযায়ী, উদয়ন এক্সপ্রেসে ধর্ষণের শিকার তরুণীর বাড়ি বান্দরবানে। থাকেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। গত ২৩ জুন সিলেটে ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২৫ জুন রাতে সেখান থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য ভাইয়ের বন্ধুর সঙ্গে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। উদয়ন এক্সপ্রেসের টিকিট না পেয়ে ভাইয়ের বন্ধু তাঁকে খাবার বগিতে তুলে দেন। তখন সেখানে ২০-২৫ জন যাত্রী ছিল। ট্রেন লাকসাম স্টেশনে পৌঁছলে পাঁচজন ছাড়া সবাই নেমে যায়। এরপর এসএ করপোরেশনের চার কর্মী ঘুমানোর কথা বলে খাবার বগিতে থাকা দুই যাত্রীকে বের করে দেয়। তখন সেখানে ওই তরুণী ছাড়া একজন বয়স্ক ব্যক্তি ও একজন নারী ঘুমিয়ে ছিলেন। শুরুতে জামাল এসে তরুণীকে শ্লীলতাহানি করে। এক পর্যায়ে শরীফ, রাশেদ ও রাসেল এসে তার সঙ্গে যোগ দেয়। তরুণী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সবাই তাঁকে রান্নাঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে খাবার বগির দুই যাত্রী জেগে উঠে চিৎকার করলে পুলিশ ও যাত্রীরা এসে জামাল, রাশেদ ও শরীফকে আটক করে। এ সময় রাসেল পালিয়ে যায়। ট্রেন থেকে নেমে ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কুতুবপুর এলাকা থেকে অপর আসামি আবদুর রব রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেব।’ রেলওয়ে পুলিশ চট্টগ্রামের ওসি শহীদুল ইসলাম বলেন, যেসব বগিতে যাত্রী থাকেন, সেখানে রেলওয়ে পুলিশ থাকে। সাধারণত খাবার বগিতে পুলিশ যায় না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, চলন্ত ট্রেনে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেটি দেখভাল করবে রেলওয়ে পুলিশ। আমরা এমন ঘটনায় তদন্ত করে শুধু চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারি।