যমুনায় পানি বাড়ায় ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি

পানি বাড়ায় নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি। ছবি-সমকাল
সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪ | ১৬:০৫ | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ | ১৬:১৯
উজানের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জে যমুনায় দ্বিতীয় দফা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সিরাজগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পরিমাপক দপ্তরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনার পানির সমতল ৪২ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
বুধবার সকাল ৬টায় পানির সমতল বিপৎসীমার (১২ দশমিক ৯০ মিটার) ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর উপজেলা পয়েন্টে যমুনার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার (১৪ দশমিক ৮০ মিটার) ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ায় যমুনা তীরবর্তী শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মনগ্রাম ও সৈয়দপুর, কৈজুরী ইউনিয়নের হাটপাঁচিল ও কাজিপুরের খাসরাজবাড়িতে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া, সদরের যমুনা তীরবর্তী রতনকান্দি-বাহুকা ও কাজিপুরের শুভগাছায় যত্রতত্র বালি উত্তোলনের কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে পাউবোর নির্মিত তীর রক্ষা বাঁধ।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে শাহজাদপুরের কৈজুরীর হাটপাঁচিল ও জালপুরের সৈয়দপুর গ্রামে গেলে যমুনার অব্যাহত ভাঙ্গন ও ভাঙ্গন কবলিত লোকজনের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সড়ানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। হাটপাঁচিল গ্রামের আইয়ুব আলী, মানিক সরকার, রাসেল মিয়া, লতিফ সরকার ও নূর ইসলাম সমকালকে জানান, এ অঞ্চলে গত ৩ বছর ধরে সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ করছে পাউবো। কিন্তু সে কাজ এখনও শেষ হয়নি।
একই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ঈমান আলী মণ্ডল, শুকচান মণ্ডল ও সিদ্দিক মণ্ডলসহ তাদের স্বজনরা জানান, ভাঙ্গন ও ধসের মধ্যে পাউবোর তীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ কতটা ফলপ্রসু হচ্ছে তা নিয়ে সন্দিহান আমরা। গত দুই সপ্তাহে অর্ধশত বাড়িঘর ও জমিজমা নদী গর্ভে চলে গেছে। পাউবোর বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর নিষ্ফল প্রয়াস আগ্রাসী ভাঙ্গনের কাছে কাজে আসছে না।
এদিকে, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন মঙ্গলবার জানান, সদরের রতনকান্দি-বাহুকাসহ তৎসংলগ্ন শুভগাছায় যমুনার পশ্চিম তীর ঘেঁষে রাতের অন্ধকারে অবৈধ বালি উত্তোলনে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও তীর রক্ষাবাঁধ। স্থানীয় বালুখেকোদের অপরিকল্পিত বালি
উত্তোলনের কারণে আগামীতে এসব এলাকায় যমুনায় প্রবল ভাঙ্গনের আশঙ্কা রয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী তাকে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, কাজিপুর উপজেলার খাসরাজবাড়িতে যমুনার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে খাসরাজবাড়িতে যমুনার চরাঞ্চলে ভাঙ্গন পরিদর্শন করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তিনি বুধবার দুপুরে জানান, যমুনায় দ্বিতীয় দফা
পানি বাড়ায় শাহজাদপুরের হাটপাঁচিল ও কাজিপুরের খাসরাজবাড়িতে যমুনার নতুন ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। আগামী জুনে হাটপাঁচিলে পাউবোর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে। আপাতত সেখানে জিওব্যাগে বালি ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানো হচ্ছে। রতনকান্দি-বাহুকা ও কাজিপুর শুভগাছায় অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে অবগত নই। খোঁজ খবর নিতে হবে।