ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নির্বাচনী সহিংসতায় যুবক নিহত

গোপালগঞ্জে চেয়ারম্যান লুটুলের ১৭ সমর্থক কারাগারে

গোপালগঞ্জে চেয়ারম্যান লুটুলের ১৭ সমর্থক কারাগারে

ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪ | ২০:১২

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় এক যুবক হত্যার ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুলের ১৭ সমর্থককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। বুধবার জেলা ও দায়রা জজ (সেশন-১) আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমানের কাছে জামিন আবেদন করে তাদের আইনজীবী। তবে বিচারক তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

গত ৮ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ সদরে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল টেলিফোন প্রতীকে ৩১ হাজার ৩৫৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বি এম লিয়াকত আলী আনারস প্রতীকে পান ২৯ হাজার ৮৬৪ ভোট। 

এলাকাবাসী জানায়, সদর উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন আটজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল ও বি এম লিয়াকত আলীর বাড়ি উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রদিঘলিয়ায়। ওই গ্রামে লিয়াকত আলী পক্ষে নেতৃত্ব দেন ছবেদ আলী ভূঁইয়া। তাঁর পক্ষে কাজ করতেন চা বিক্রেতা ওসিকুর। অপরপক্ষে কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দিতেন তাঁর ছোট ভাইয়ের শ্বশুর কালু ভূঁইয়া। নির্বাচন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল।

এসব বিরোধের জেরে ১৪ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। সহিংসতায় ওসিকুর ভূঁইয়াসহ (২৭) ছয়জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ওসিকুরকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ১৭ মে রাতে ওসিকুরের বোন পারুল বেগম ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুলকে। রোববার তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তবে বিচারক কামরুল হাসান তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সব মিলিয়ে ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জন আসামি জেলহাজতে রয়েছেন।

ওসিকুরের লাশ নিয়ে ১৫ মে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। ১৬ মে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন। ১৯ মে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে। হত্যার বিচার দাবিতে আরও কয়েক দফায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। 

পুলিশ সূত্র জানায়, মামলার পর বিজয়ী চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার ১৭ সমর্থক উচ্চ আদালত থেকে তিন সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন। বুধবার ছিল জামিনের শেষ দিন। তারা এদিন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এম জুলকদর রহমান। তিনি বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার পক্ষেও জামিন আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বিচারক তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

আরও পড়ুন

×