কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা
আ.লীগ নেতা সোহেল শিকদারকে বাদ দিয়ে চার্জশিট ডিবির

যুবলীগ নেতা জামাল
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪ | ২৩:১৯
কুমিল্লার তিতাসে বোরকা পরা ৩ সন্ত্রাসীর গুলিতে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডের এক বছর দুই মাস পর ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। চার্জশিটভুক্তদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া তিন শুটার রয়েছে। তবে মামলার অভিযোগ থেকে তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদারসহ ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের পরিবার।
আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর শনিবার সমকালকে এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি রাজেস বড়ুয়া।
মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী পপি আক্তার বলেন, চার্জশিটের কপি এখনও হাতে পাইনি। তবে জানতে পেরেছি হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কয়েকজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পপি বলেন, হত্যার পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন এজাহারনামীয় ৪ নম্বর আসামি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল শিকদার এবং ৬ নম্বর আসামি শাকিল। তারাই পরিকল্পনা করে সন্ত্রাসীদের দিয়ে জামালকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে শাকিল মামলার ১ নম্বর আসামি সুজনের বড় ভাই। কিন্তু পুলিশ তাদেরই চার্জশিটে নাম রাখেনি। তিনি স্বামী হত্যার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এবং জানান, চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়া হবে।
বাদীর আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার হওয়া অনেক আসামি রিমান্ডে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছে। কিন্তু চার্জশিটে এর প্রতিফলন ঘটেনি। মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছে তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের শুটার আকাশ ওরফে আরিফ, কালা মনির ও দাউদকান্দির চরচারুয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু। তারা সরাসরি হত্যা মিশনে অংশ নেয়।
শনিবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজেস বড়ুয়া বলেন, এ হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। কিলিং মিশনের জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল আসামি সুজন ও অলি হাসান। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা ছাড়াও ওই এলাকায় আগের একাধিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামালের সঙ্গে আসামিদের বিরোধ চলছিল। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের স্বীকারোক্তি ও তদন্তে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় ৫ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে ৬ আসামি পলাতক।
গত বছরের ৩০ এপ্রিল রাতে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজারে বোরকা পরা তিন সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হন তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
শুটার দেলোয়ার হোসেন দেলু গ্রেপ্তার হয়ে গত বছরের ১০ মে থেকে কারাগারে। অপর শুটার কালা মনির ও আরিফ ধরাছোঁয়ার বাইরে। তদন্তকারী সংস্থার ধারণা, দুই শুটার দেশের বাইরে পলাতক।