জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

হলের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ভেতরে নিরাপত্তা কর্মীর অবস্থান। ছবি-সমকাল
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৪ | ১৪:৩১ | আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ | ১৫:১২
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে নিরাপত্তারক্ষীরা বসে আছেন। অনেক হলের নিরাপত্তারক্ষীরা হলের সামনে বসে গল্প করেছেন।
নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, পুলিশের হামলার পর সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত হলেই ছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হল ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভোর ৬টার দিকে ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ আসে।
আ.ফ.ম কামাল উদ্দিন হলের নিরাপত্তারক্ষী সোলায়মান গণমাধ্যমকে বলেন, রাতেই হলের সব শিক্ষার্থী হল ছেড়ে চলে গেছেন। দু'জন প্রতিবন্ধী ছাত্র রয়েছেন। আমরা তাদের খাবার এনে দিয়েছি। রাতে বিদ্যুৎ ছিল না সকাল ৬টার দিকে আসছে।
এদিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের ওপর পরে আছে গতকালের সংঘর্ষের সময় ছোড়া ইট পাটকেলের খণ্ডিত অংশ। টিয়ার শেলের খোসা। পুরোনো ল্যাম্প পোস্টের খুঁটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের ভাঙা জানলার কাঁচ পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভবনের সামনে অপেক্ষা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে উপাচার্যকে পাওয়া যায়নি। ভবনের মূল ফটকে দায়িত্বপালনরত নিরাপত্তারক্ষী কামরুল জানান উপাচার্য বাসভবনে নেই। সকালে উপাচার্য ভবনের নিরাপত্তারক্ষী কামরুল বলেন, উপাচার্য স্যার বাসভবনে নেই। শুনেছি গতকাল রাতেও ছিলেন না।
অপর দুই সহ-উপাচার্যের বাসভবনের সামনের ফটকে দায়িত্বপালনরত নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে একজন জানান সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) শেখ মো. মনজুরুল হক ঘুমাচ্ছেন। অপর সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁর কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য।
এদিকে সকাল থেকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। তারা হলগুলোতে গিয়ে প্রাধ্যক্ষদের কাছে থেকে হল ভ্যাকেন্ট হয়েছে কিনা- তা নিশ্চিত হতে চান।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, বহিরাগত কেউ যাতে ক্যাম্পাসে কেউ যেন থাকতে না পারে, সেজন্য আমরা সকাল থেকে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। পাশাপাশি হলগুলোতে যাতে কেউ না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী নির্দেশনা মেনে চলে গেছে৷ আমি সবগুলো হলে খোঁজ নিয়েছি, তারা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছে না। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হলের সামনে গিয়ে প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে হল ভ্যাকেন্টের বিষয়টি নিশ্চিত হবে।