ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

৭০০ কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

৭০০ কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

ডিমলার বুড়িতিস্তা নদীর কেয়ার বাজার এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মানববন্ধন স্থানীয় বাসিন্দাদের

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৪ | ২০:১৮

তিন ফসলি জমি রক্ষা ও ৭০০ কৃষকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে নীলফামারীর ডিমলায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। গত বুধবার উপজেলার বুড়িতিস্তা নদীর কেয়ার বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়েজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন আব্দুল আলিম, জাহেদুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ, নুর আলম, লায়ন ইসলাম, হাবিব হাসান, আশুতোষ কুমার প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন, ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনায় ১ হাজার ২১৭ একর জমি হুকুম দখলে (মৌখিক সম্মতি) অধিগ্রহণ করে পাউবো। পরবর্তী সময়ে সেটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তখন থেকে জমির মালিকানা সূত্রে স্থানীয় বাসিন্দারা কৃষিকাজ করছেন। 

২০১০ সালে পাউবো মালিকানা দাবি করে ৪৯২ দশমিক ৭১ হেক্টর ব্যক্তি মালিকানা জমি মেসার্স তুষুকা নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিসোর্স লিমিটেডকে ইজারা দেয় জানিয়ে বক্তারা বলেন, তুষুকা কর্তৃপক্ষ জমিতে কার্যক্রম শুরু করলে এলাকাবাসী বাধা দেন। পরে জমি রক্ষায় প্রকৃত মালিকরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। উচ্চ আদালতের আদেশে তাদের কার্যক্রম স্থগিত হয়। 

সম্প্রতি জমির মালিকদের না জানিয়ে হাজারো কৃষকের ৯৫৭ একর কৃষিজমি দখলে নিয়ে জলাধার খনন করছে পাউবো। খননের জন্য বসানো হয়েছে অর্ধশতাধিক ড্রেজার যন্ত্র। জমি অধিগ্রহণের কোনো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এসব জমিতে তারা এখন যেতে পারছেন না। পাউবো ও ঠিকাদারের লোকজন জমির দখল ছাড়তে কৃষকদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করছে। তারা দফায় দফায় ৭০০ কৃষকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়েছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। 

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষকদের দাবি, অধিগ্রহণ না করেই ব্যক্তি মালিকানার জমিতে জলাধার খনন ও অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও বসতঘর। এ ছাড়া বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন কমবে। 

এ বিষয়ে নীলফামারী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের বলেন, ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি প্যাকেজে বুড়িতিস্তা নদী খননের জন্য পাউবো ৬০ বছর আগে জমি অধিগ্রহণ করেছে। অধিগ্রহণকৃত ১ হাজার ২১৭ একর জমির প্রথম পর্যায়ে নদী সম্প্রসারণ বা খনন করা হবে ৬৬৭ একর। 

খনন শেষে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ৫ হাজার ৫০০ একর জমিতে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা মিলবে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কাজে দফায় দফায় বাধা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।

 

আরও পড়ুন

×