সুনামগঞ্জে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইন ট্রিপ, লো-ভোল্টেজ নিয়ে ভোগান্তি

প্রতীকী ছবি
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪ | ১৭:৫৪ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ | ১৭:৫৪
তীব্র গরমে বারবার বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ট্রিপ করার পাশাপাশি লো- ভোল্টেজ সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জ শহরবাসী। লো-ভোল্টেজের কারণে অনেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (এসি) ব্যবহার করতে পারছেন না। কোন কোন এলাকায় ফ্যানও ঘুরছে না। এছাড়া পানির পাম্প দিয়ে পানি ওঠানোও সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাপাসিটির চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ চাহিদা তৈরি হওয়ায় বারবার লাইন ট্রিপ করেছে। পরে লোড কমিয়েছেন তারা। বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হয়েছে। লো-ভল্টেজ সমস্যার সমাধানও করা হচ্ছে।
শহরের শহীদ আবুল হোসেন রোডের বাসিন্দা এনামুল হক বললেন, শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ট ছিলেন সকলে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফ্যানও কম ঘুরেছে। এসিও চলেনি। একই ভাষ্য ওই এলাকার বাসিন্দা নিলয় দাস, রজত কান্তি দাস ও ইউসুফ মিয়ার।
আবুল হোসেন রোডের বাসিন্দা স্মৃতি শ্যাম পুরকায়স্থ জানালেন, ভোল্টেজ সমস্যার কারণে তার নতুন কেনা ফ্রিজের সার্কিট বিকল হয়ে গেছে। এই এলাকার বাসিন্দা সুভাস দাস বলেন, ভোল্টেজ সমস্যায় পানির পাম্পেও কাজ কম করছে। একদিকে গরম, অন্যদিকে পানি কম ওঠায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শহরের তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা হোসেন আহমদ সৌরভ জানালেন, পৌরসভার সরবরাহ করা পানির লাইনে কেউ কেউ অবৈধভাবে মোটর সংযোগ দেওয়ায় অন্যরা পানি কম পাচ্ছে। তিনি জানান, যারা মোটর সংযোগ দিতে পারেনি তাদের লাইনে ঝির ঝির করে সামান্য পানি আসছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
শহরের আবুল হোসেন রোডের বাসিন্দা বিজিত শ্যাম পুরকায়স্থ জানালেন, গেল বৃহস্পতিবার তার বাসার পাঁচটি মিটারে ১৬৫ থেকে ১৭০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে। যা দিয়ে সাবমার্সিবল টিউবওয়েলের পানি ওঠানো যায়নি। দিনের বেলা কোন কোন সময় ভোল্টেজ আরও নীচে নেমেছে। বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনকে দিয়ে কাজ করিয়েও ভোল্টেজ বাড়ানো যাচ্ছে না। তারা বলছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে। যেসব এলাকায় এই অবস্থা ওখানে নতুন ট্রান্সফরমার বসাতে হবে।
নাম না প্রকাশের শর্তে সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসের একজন প্রকৌশলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হাজীপাড়া অফিসে দুশ’এর কম ভোল্টেজ দেখা যায়। পরে তারা জাতীয় গ্রীডের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয়ভাবে ভোল্টেজ বাড়ান। তিনি জানান, বারবার বিদ্যুতের লোড কম-বেশি হতে থাকলে, বাসা বাড়ি’র ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ বিদ্যুৎচালিত যে কোন ধরণের যন্ত্রই নষ্ট হতে পারে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কালী কৃষ্ণ পাল বলেন, পৌরসভার পানি শোধনাগার থেকে আগে যেভাবে পানি পেয়েছেন গ্রাহকরা এখনো সেভাবেই পাচ্ছেন। কেউ পানি কম পাচ্ছেন এমন অভিযোগ জানাননি।
সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু নুয়মান বললেন, বিদ্যুৎ প্লান্ট দূরে থাকলে ভোল্টেজ এমনিতেই কিছু কমে যায়। গত শনিবার জাতীয় গ্রীড লাইনেই ১৩২ কিলোভোল্টের মধ্যে ১১৭ কিলোভোল্ট সরবরাহ হয়েছে। সুনামগঞ্জের যেসব এলাকায় লো-ভল্টেজ হচ্ছে, কাজ করে দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মিলন কুমার কুন্ডু বলেন, সুনামগঞ্জে তীব্র গরমের কারণে বিদুৎতের চাহিদা বেড়ে গেছে। জেলা পল্লী বিদ্যুতের ৩৬ মেঘাওয়াট ধারণ ক্ষমতা আছে। শুক্রবার ৫৪ মেঘাওয়াট লোড দেখা দেওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বন্ধ হয়ে যায়। পরে লোডশেডিং করে সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়।