ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সৎমা দিলেন বিয়ে, পরদিনই কিশোরী বধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

সৎমা দিলেন বিয়ে, পরদিনই কিশোরী বধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪ | ২১:০০ | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪ | ২১:০৩

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের এক দিন পর সাহিদা আক্তার নামে এক কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সাহিদা উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কটপাড়া গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী মিজানুর রহমানের মেয়ে। সে স্থানীয় কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

রোববার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন। এর আগে শুক্রবার তার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।

জানা গেছে, লালমাই উপজেলার মিতল্লা গ্রামের প্রবাসী ফারুক মিয়ার ছেলে আল আমিনের সঙ্গে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে গত শুক্রবার সাহিদা আক্তারের বিয়ে সম্পন্ন হয়। গত শনিবার আল আমিনের বাড়িতে বউভাত অনুষ্ঠান শেষে স্বজনরা সাহিদা আক্তারকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। শনিবার রাতেই নতুন জামাই আল আমিন শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতের খাবার খেয়ে নবদম্পত্তি ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার সকাল ৭টার দিকে নানি খুরশিদা বেগমের চিৎকারে লোকজন এসে দেখেন সাহিদা আক্তার ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁছিয়ে ঝুলে আছে। কিছুক্ষণ পর জামাই আল আমিনও ঘুম থেকে উঠে এমন অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে যান।

স্থানীয়রা জানান, সাহিদা আক্তার কাদৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা মিজানুর রহমান বর্তমানে বাহরাইনে অবস্থান করছেন। সাহিদা আক্তারের সৎমা মুন্নি বেগম কারও সঙ্গে পরামর্শ না করেই নিজের মতো করে শুক্রবার তাঁর নিকটাত্মীয় দুবাই প্রবাসী ফারুক মিয়ার ছেলে আল আমিনের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করেন।

সাহিদা আক্তারের স্বামী আল আমিন বলেন, ‘শনিবার রাতের খাবার শেষে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। রোববার সকালে নানি শাশুড়ি খুরশিদা বেগমের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি সাহিদা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গত দুই দিনে আমাদের মাঝে কোনো ধরনের বাগ্বিতণ্ডা হয়নি। সে বিয়ের দিন থেকে চুপচাপ ছিল। কী কারণে আত্মহত্যা করেছে, আমার জানা নেই।’

সাহিদা আক্তারের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন বলে, ‘আমার বোন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পড়ালেখায় সে ছিল মেধাবী। প্রায় আট বছর আগে আমার মা মৃত্যুবরণ করেন। এর পর আমার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমার সৎমা মুন্নি বেগম শুক্রবার বোনকে তাঁর নিকটাত্মীয়ের কাছে বিয়ে দেন। আমার বোন আত্মহত্যা করেছে।’

সাহিদার সৎমা মুন্নি বেগম বলেন, ‘রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সাহিদা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’ নবম শ্রেণির মেয়েকে কেন বিয়ে দিলেন– এই প্রশ্নর জবাবে তিনি জানান, নবম শ্রেণিতে পড়লেও তার বয়স ১৮ বছরের বেশি হয়েছে। এ ছাড়া বিয়েতে সে কোনো প্রকার আপত্তি করেনি।

চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

×