ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

গাইবান্ধায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিজয়োল্লাস

গাইবান্ধায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিজয়োল্লাস

গাইবান্ধায় দলীয় কার্যালয় জাসাস আয়োজিত আনন্দ আয়োজনে বিএনপির নেতাকর্মীরা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪ | ১৯:৩৬

২০০৮ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয় বিএনপি। এর পর নানা ঘাতপ্রতিঘাতে চলতে হয়েছে দলটিকে। কোটা আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর সস্তি ফিরেছে গাইবান্ধার নেতাকর্মীর মধ্যেও। দীর্ঘ ১৫ বছর পর দলীয় কার্যালয় বুধবার (৭ আগস্ট) হাজার হাজার নেতাকর্মীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিতে নেতাকর্মীর উচ্ছ্বাস ও আবেগ প্রকাশ করতে দেখা গেছে এ সময়। 

বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বলেন, এত বছর খুনি হাসিনার অত্যাচার-নির্যাতনে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারিনি। হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের আটকানো হয়েছে। শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। আজ মনে হচ্ছে, নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।

৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণার পরপরই শহরের সার্কুলার রোডে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে শান্তি মিছিল বের করেন। ৬ আগস্টও দলীয় কার্যালয়ে কর্মসূচি পালন করা হয়। 

গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে শত শত নেতাকর্মী জড়ো হতে থাকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে। এ সময় নেতাকর্মীর স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন তারা। দুপুর ১২টার দিকে শহরের সার্কুলার রোডে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির উদ্যোগে সভা করে জেলা জাসাস (জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা)। শুরুতে বিজয় মঞ্চে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এর পর দোয়া, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। 
সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোর্শেদ হাবিব সোহেল সভায় সঞ্চালনা এবং শহর বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুজ্জামান শহীদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল। বক্তব্য দেন– জেলা কৃষক দলের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, জিয়া পরিষদের আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল আরজু, জেলা যুবদলের সভাপতি রাহিব হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খোকন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি জাকারিয়া আলম জিম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি শোভা, সাধারণ সম্পাদক মৌসুমি তমা, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক বজলুল করিম রপু, সদস্য সচিব খান মোহাম্মদ কাওসার ওয়াহিদ সুজন প্রমুখ। 

শহর বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুজ্জামান শহীদ বলেন, ‘দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। বেশ কয়েকবার কার্যালয় ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে। অফিসের দেয়াল ছাড়া এখন কিছুই নেই। আজ আমরা স্বাধীন। নতুন করে রাজনীতি শুরু করব। দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’
সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোর্শেদ হাবিব সোহেল বলেন, ‘১৭ বছর জালিম শাসকের হাতে দেশ পরিচালিত হয়েছে। বহু নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ছাত্র সমাজ, সাধারণ জনগণের আন্দোলনে অবৈধ খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু তার প্রতিহিংসা ছড়িয়ে গেছে দলের নেতাকর্মীর মধ্যে। তারা এ বিজয়ে আবার বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সনাতন ধর্মের মানুষের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালাতে পারে। তাই কোনো ধর্ম-বর্ণের মানুষের ওপর যেন আঘাত না আসে, সে দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। আমরা ভেঙে যাওয়া অফিসেই এখন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। নেতাকর্মীরা অফিসে আসা শুরু করেছেন। তারা সবাই উদ্দীপিত এবং উচ্ছ্বসিত। আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলব।’
 

আরও পড়ুন

×