হাতিবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
প্রেষণে ছয় চিকিৎসক-কর্মচারী, ব্যাহত চিকিৎসাসেবা

ফাইল ছবি
হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ১৯:৫১ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৪ | ১৯:৫৩
নিয়োগ পেয়েছেন হাতিবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে তাদের প্রেষণে পাঠানো হয়েছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। জনবল সংকটের মধ্যে প্রভাব খাটিয়ে ছয়জন চিকিৎসক-কর্মচারীর এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রেষণে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা।
৫০ শয্যার হাতীবান্ধা হাসপাতালে অনুমোদিত ১৬৯ পদের মধ্যে শূন্যপদ ৭০টি। চিকিৎসক-কর্মচারী আছেন ৯৯ জন। এর মধ্যে আবার ছয়জন রয়েছেন প্রেষণে। তারা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে বেতন-ভাতা তুললেও প্রভাব খাটিয়ে প্রেষণে কাজ করছেন সুবিধাজনক হাসপতালে। তাদের মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (পেডিয়াট্রিক) শাহানা আফরীন আছেন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে। একইভাবে মেডিকেল অফিসার ডা. সুজন মণ্ডল পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, মকবুল হোসেন (এসএসিএমও) পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) মমিনুল আজিম চৌধুরী ঢাকায়, গোলাম ফারুক সদর উপজেলায়, অফিস সহকারী নিখিল চন্দ্র রায় সদর হাসপাতালে আছেন। তারা সবাই বেতন-ভাতা উত্তোলনসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন হাতীবান্ধা হাসপাতাল থেকে।
বুধবার সকালে শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন সিংগীমারী এলাকার মনিরা আক্তার। তাঁর অভিযোগ, অসুস্থ সন্তানকে শিশু বিশেষজ্ঞ শাহানা আফরিনকে দেখাবেন বলে এসেছেন। এখন দেখেন তিনি নেই। বাধ্য হয়ে জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসককে দেখিয়েছেন।
একই এলাকার মাসুদা আক্তার বলেন, হাসপাতালে এসে শুনি ডা. শাহানা আফরিন নেই। তিনি সপ্তাহে একদিন রোগী দেখেন। শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় হাসপাতালে আসা শিশুরা ভালো চিকিৎসা পাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, আলট্রাসনোগ্রাফি থেকে শুরু করে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, ইসিজি, অপারেশন থিয়েটারসহ সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা আছে এই হাসপাতালে। অথচ দক্ষ টেকনিশিয়ানের অভাবে যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা জরুরি ও অভ্যন্তরীণ বিভাগে। সেখানেও পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। ফলে তিস্তাবেষ্টিত এ উপজেলার ১২ ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়ছেন তারা। দ্রুত জনবল নিয়োগ ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যারা প্রেষণে বিভিন্ন জায়গায় আছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, কয়েকজন চিকিৎসক প্রেষণে অন্য হাসপাতালে কাজ করলেও বেতন-ভাতা নিচ্ছেন উপজেলা হাসপাতাল থেকে। এ সব কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। চিকিৎসকদের প্রেষণ বাতিল করে নিজ নিজ পদায়নকৃত জায়গায় ফিরিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।