ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

উলিপুর

দল গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি-জামায়াত, মাঠে নেই আওয়ামী লীগ

দল গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি-জামায়াত, মাঠে নেই আওয়ামী লীগ

ফাইল ছবি

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:৩৬

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ের যাওয়ার পর থেকে এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে বিএনপি-জামায়াত। চলছে ঘরোয়া বৈঠক, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময়। অন্যদিকে অনেকটা কোনঠাসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, গ্রেপ্তার-আতঙ্ক ও পুলিশি হয়রানির মুখে তারা মাঠে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছেন। দল গোছাতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুল জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম ও পুলিশি নির্যাতনের ভয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে অনেকটা স্তিমিত হয়ে পড়েছিলেন। এখন বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলসহ সহযোগী সংগঠনের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের আত্মার মাগফেরাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী  খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা, হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদ রক্ষাসহ সামাজিক কাজও চলছে বলে জানান এ নেতা। 

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. হায়দার আলী মিয়া বলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে শক্তিশালী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি। তারা সংঘবদ্ধ থেকে মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে কাজ করবে। সেই সঙ্গে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি অথবা মানুষকে হয়রানি না করার কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অভিযোগ পেলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। সামনের নির্বাচনকে ফলোপ্রসূ করার লক্ষ্য নিয়েও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 
গত ১ আগস্ট জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। একই দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনও জারি করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রকাশ্যে মাঠে নামে জামায়াত ও ছাত্রশিবির। দীর্ঘদিন পর রাজপথে প্রকাশ্যে দেখা মেলে দলটির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীর। দল গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে এ দলটিও।

জামায়াতে ইসলামীর উলিপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির মতো জামায়াতে ইসলামের নেতাকর্মীর ওপরও শুরু হয় অত্যাচার-নির্যাতন। কারণে-অকারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হয়। এতদিন প্রকাশ্যে কাজ করতে পারেনি তারা। এখন দলকে সক্রিয় করতে মূল সংগঠনের পাশাপাশি কাজ করছে জামায়াতে ইসলাম ও ছাত্রশিবিরের নারী শাখা। 

উপজেলা জামায়াতের আমির মশিউর রহমান বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মুখে দিশেহারা হয়ে শেখ হাসিনার সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এতে রাষ্ট্রীয় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। জামায়াত-শিবির কখনোই শেষ হয়ে যায়নি। জেল-জুলুম-নির্যাতনের পরও নেতাকর্মীরা জামায়াতের আদর্শ ছেড়ে যাননি। আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন জামায়াত ইসলাম আরও শক্তিশালী।

এ নেতা আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার বিদায় নিয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করব। হিন্দু ধর্মের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরও সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আহসান হাবিব রানার ভাষ্য, দলীয় নেতাকর্মীর মধ্যে কিছুটা হতাশা ও ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দল গোছাতে আমরা সময় নিচ্ছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না থাকায় কোনো কর্মকাণ্ড করছি না। নির্দেশনা এলেই দলকে সংগঠিত করে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগকে এত সহজে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না বলে জানান এ নেতা।

 
 

আরও পড়ুন

×