ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

লাপাত্তা কুড়িয়ানা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক

সমিতির টাকায় বাড়ি, নামে-বেনামে জমি

সমিতির টাকায় বাড়ি, নামে-বেনামে জমি

ফাইল ছবি

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২০:৪৪

স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিত্যানন্দ সমদ্দার অবসরের একত্রিশ লাখ টাকা সমিতিতে জমা রাখেন। প্রথম প্রথম মুনাফাও দেওয়া হয় তাঁকে। পরে আরও এক লাখ টাকার ডিপিএস করেন। এখন মুনাফা দেওয়া দূরের কথা, পুরো মূলধন নিয়েই লাপাত্তা কুড়িয়ানা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক সঞ্জীব মণ্ডল। 

আদাবাড়ী গ্রামের আরতী হালদারের স্বামী মারা গেছেন। ঘরে প্রতিবন্ধী মেয়ে। মেয়ের ভাতাসহ জমানো টাকা রাখেন সমিতিতে। প্রথম দিকে কিছু মুনাফা দেওয়া হয়। সেই টাকায় চলত তাদের সংসার। একপর্যায়ে জমানো পুরো টাকা জমা রাখেন সমিতিতে। সেই টাকা নিয়ে সঞ্জীব মণ্ডল উধাও। 

আরতী কেঁদে কেঁদে বলেন, ঘরে খাবার নেই। চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। হাট-বাজার করতে পারি না। প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে এখন কীভাবে বাঁচব।

নিত্যানন্দ সমাদ্দার, আরতী হালদারের মতো প্রায় চার হাজার গ্রাহকের ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সমিতির পরিচালক সঞ্জীব মণ্ডল। একসময় গণপতিকাঠি গ্রামে এক কাঠা জমির ওপর টিনশেড বাড়িতে বসবাস করতেন। এখন কুড়িয়ানা বাজারে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গড়ে তোলেন আলিশান তিনতলা বাড়ি। নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনেছেন। গ্রাহকরা টাকার জন্য চাপ দিলে কয়েক মাস আগে পরিবার নিয়ে গা-ঢাকা দেন। টাকা ফিরে পেতে গ্রাহকরা বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিলেও কাজ হয়নি। নিরুপায় হয়ে গত বুধবার সকালে তারা পরিচালকের তালাবদ্ধ বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা আমানত ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৫ জুন আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের কুড়িয়ানা বাজারে গণপতিকাঠি গ্রামের গৌরাঙ্গ মণ্ডলের ছেলে সঞ্জীব মণ্ডল সমিতি গড়ে তোলেন। বেশি মুনাফা দেওয়ার কথা বলে চার-পাঁচ হাজার সদস্য সংগ্রহ করেন। তাদের কাছ থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিকসহ এককালীন আমানত সংগ্রহ করেন। প্রথম প্রথম আমানতকারীদের তড়িৎ মুনাফা প্রদান করেন। জমজমাট অবস্থা দেখে মানুষ হুমড়ি খেয়ে সমিতিতে আরও টাকা জমা রাখে। সাত বছরে সদস্যদের জমানো টাকা নিয়ে কয়েক মাস আগে আত্মগোপনে চলে যান পরিচালক সঞ্জীব মণ্ডল।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি জানান, গত মাসে এ অফিসে যোগদান করেছি। এসেই মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে টাকা সংগ্রহ করেছে। তদন্ত করে টাকা উদ্ধারে চেষ্টা করা হবে। 
 

আরও পড়ুন

×