ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়াতে ৪৮ ঘণ্টায় ২৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত

কুষ্টিয়াতে ৪৮ ঘণ্টায় ২৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত

কুমারখালী উপজেলা পরিষদ মাঠ পানির নিচে। ছবি-সমকাল

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৭:৫৮

নিম্নচাপের প্রভাবে কুষ্টিয়াতে রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ নিয়ে গেল ৪৮ ঘণ্টায় ২৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরে ও গেল পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক মো. আল আমিন।

তিনি বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে গত শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি গত শনিবার বিকেলে রূপ নেয় ভারী বৃষ্টিপাতে। পরে ওইদিন মধ্যরাত থেকে আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত দমকা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি বছরে ও গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. আল আমিন বলেন, এর আগে ২০১৮ সালে ৭৯ মিলিমিটার, ২০১৯ সালে ৪৪, ২০২০ সালে ৪৯, ২০২১ সালের জুন মাসে ১০৫,  ২০২২ সালে ৬৪ ও ২০২৩ সালে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, খামারিসহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। জলাবদ্ধতায় ডুবেছে কৃষকের ফসল। ভেসে গেছে পুকুর। ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও গাছপালা। সোমবার দুপুরে উপজেলার যদুবয়রা, পান্টি, চাঁদপুর, সদকী ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও কুমারখালী পৌর এলাকা সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

উপজেলা সদকী ইউনিয়নের গড়েরমাঠ এলাকায় প্রায় ২২ বিঘা জমির পুকুরে মাছ এবং পুকুরপাড়ে সবজি চাষাবাদ করেন খামারি সুজন আলী পলাশ। তিনি সমকালকে জানান, মাস দুই পরেই প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রির প্রত্যাশা ছিল তাঁর। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পুকুর ভেসে গেছে। লাউ ও ঝিঙে সবজি নষ্ট হয়েছে। মাছ ও সবজিতে তাঁর প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এসময় যদুবয়রা পশুহাট পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. আব্দুল গনি বলেন, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে দমকা হাওয়া। গত রোববার হাটে মাত্র দুইটি গরু এসেছিল। তাও বিক্রি হয়নি।

অটোচালক সাগর হোসেন বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া হয়। সকাল থেকে একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। পথেঘাটে তেমন মানুষ নেই। মাত্র ১১০ টাকা আয় হয়েছে তার।

নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়ায় ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৩০ হেক্টর মাসকালাই, ৬০ হেক্টর সবজি ও ৬০ হেক্টর জমির কলা ক্ষেতের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বড় ধরণের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ভারী বৃষ্টির কারণে কিছু গাছপালা ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। তবে বিভিন্ন ফসলের মাঠে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তা নিরসনের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

×