কাজে আসছে না কমিউনিটি টয়লেট

.
গাইবান্ধা সংবাদদাতা
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:০৬
চারদিকে ময়লা ও আবর্জনা। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পানি জমে আছে। ভন ভন করছে মশা-মাছি। দু-একটি ব্যবহার করা গেলেও বেশির ভাগেরই দরজা ও প্যান ভাঙা। নেই আলো কিংবা পানির ব্যবস্থা। সংযোগ রিংগুলো ভেঙে ময়লা পানি বের হচ্ছে। বাসাবাড়ির ভেতরেই পাইপের সংযোগ দেওয়ায় দুর্গন্ধে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
এ চিত্র গাইবান্ধা পৌরসভার শতকরা ৯৫ ভাগ কমিউনিটি টয়লেটের। এগুলো এখন আর কাজে আসছে না। দুর্গন্ধ আর কীটপতঙ্গের কারণে সংলগ্ন স্থানে বসবাস ও চলাচল দুরূহ হয়ে পড়লেও মেরামতের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। মলমূত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি পরিবেশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে দ্বিতীয় নগর পরিচালনা অবকাঠামো উন্নতীকরণ সেক্টর প্রকল্পের আওতায় পৌরসভার ৯টি ওয়াডের্র ১০টি ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ১৪০টি কমিউনিটি টয়লেট ও ৬২টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। এতে ব্যয় হয় ২ কোটি ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৫ টাকা। একসঙ্গে দুটি টয়লেটের সঙ্গে ড্রেন, সিসি রোড, স্লাব, ই-ফিলিংস এবং পলিসেড করা হয়েছে। পৌরসভার দায়িত্বে এসব কাজ বাস্তবায়ন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল, সাধারণ মানুষের জন্য উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো। উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই বা সামর্থ্য নেই– এমন কয়েকটি পরিবারকে একটি টয়লেট ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
পৌরসভার দরিদ্র এবং ঘনবসতিপূর্ণ ১০টি নির্বাচিত এলাকার মধ্যে ৯ নম্বর ওয়াডের্র কুটিপাড়া, ৮ নম্বর ওয়াডের্র সবুজ পাড়া, ৫ নম্বর ওয়াডের্র কলেজপাড়া ও মাঝিপাড়া, ১ নম্বর ওয়াডের্র রেল কলোনি, মাস্টারপাড়া, বিহারি পট্টি, হকার্স মার্কেট, কনকরায় এবং গুচ্ছগ্রামে টয়লেটগুলো তৈরি হয়। দরিদ্র পরিবার, পথচারী, পরিবহন যাত্রী, শ্রমিক এবং শহরে আসা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কথা ভেবেই মূলত এসব টয়লেট নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য, সঠিক জায়গায় টয়লেট স্থাপন করা হয়নি। নরম মাটির ওপর টয়লেট করায় কিছুদিনের মধ্যেই দেবে গেছে। দুটি টয়লেট একাধিক পরিবার ব্যবহার করায় জটিলতা তৈরি হয়। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকি এবং যত্নের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। মোট কথা, পরিকল্পনায় ঘাটতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এগুলো মেরামত না করলে পরিবেশ দূষিত হয়ে ব্যবহারকারী পরিবার ও আশপাশের মানুষ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে।
সবুজ পাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বুলবুলি বেগম বলেন, ‘টয়লেটের দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে ছেলেমেয়ের অসুখ লেগেই থাকে। আপনারা টয়লেটগুলো ঠিক করার ব্যবস্থা করে দেন।’
গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ টয়লেটগুলো মেরামতের বিষয়ে উদাসীন। তাদের উচিত সেগুলো উপযোগেী করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হানিফ সরদার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিত্যক্ত এসব টয়লেট সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহম্মদ বলেন, পৌর প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- ময়লা