নড়াইল সদর হাসপাতাল
কর্মবিরতিতে নার্স, ভর্তি রোগীদের চরম দুর্ভোগ

ছবি-সংগৃহীত
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪ | ১০:৫০
ভাঙা হাত নিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন পাশের মাগুরার নহাটা গ্রামের সোহেল রানা। গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সেখানে কর্মবিরতি পালন করেন নার্সরা। এতে ইনজেকশন ছাড়াও অন্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন সোহেল। একই রকম দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীরা। সেবাবঞ্চিত হয়ে অনেকের অবস্থা জটিল হয়েছে। অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি ক্লিনিকে ছুটছেন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও ওয়ার্ডের বিছানায় বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছিলেন রোগীরা। যদিও জরুরি সেবার জন্য ১০ জন নার্স দায়িত্ব পালন করেন এদিন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদ থেকে সব ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ করে নার্সিং কর্মকর্তাদের পদায়নের এক দফা দাবিতে নড়াইলে নার্সদের কর্মবিরতি শুরু হয় মঙ্গলবার। এদিন তারা চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা চলে কর্মবিরতি পালন। এর আগে নার্সরা ১ অক্টোবর তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ নড়াইলের আয়োজনে বুধবার সদর হাসপাতাল চত্বরে কর্মবিরতি পালনকালে বক্তব্য দেন জেলা শাখার আহ্বায়ক শাহিনুর খাতুন, সদস্য পলি কুণ্ডু, মুজিদা খানম ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি পারভীন। তারা দাবি মেনে নেওয়া না হলে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতির কারণে বিপাকে পড়েন নড়াইল সদর উপজেলার সরশপুর গ্রামের এক সিজারের রোগী। তাঁর স্বজন নিত্যানন্দ বিশ্বাস বলেন, চার দিন ধরে তাঁর রোগী হাসপাতালে ভর্তি। রোগীর অবস্থা বেশ খারাপ। কিন্তু নার্সরা বাইরে গিয়ে বসে আছেন। ফলে তারা সেবা পাচ্ছেন না। এতে অনেক রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আবার অনেকেই সেবা না পেয়ে চলে যাচ্ছেন।
সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রামের সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, ‘এক দিন আগে আমার স্ত্রীকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু নার্সরা কর্মবিরতি পালন করায় কোনো চিকিৎসা শুরু হয়নি। অসুস্থ হয়ে সে কাতরাচ্ছে।’
নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ গাফ্ফার বলেন, হাসপাতালে ৮৪ জন নার্স আছেন। এর মধ্যে উপস্থিত থাকেন ৬৫-৭০ জন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে স্বাস্থ্যসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তার পরও বুঝিয়ে জরুরি সেবাদানের চেষ্টা করছেন।