‘ম্যাস হিস্টিরিয়ায়’ অসুস্থ ৩৪ ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি

হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ শিক্ষার্থীরা। ছবি: সমকাল
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ | ২১:৩১
বরগুনার বেতাগীতে তীব্র গরমে ম্যাস হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪০ জন ছাত্রী অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অসুস্থ ৩৪ ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মোকামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সকাল পৌনে ১০টায় ওই বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে পিটি করানোর পর ছাত্রীরা সবাই ক্লাসে ফিরে যায়। পৌনে ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসে। পরে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ৪০ জন ছাত্রী একে একে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানালে অসুস্থ ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্য অসুস্থরা বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অসুস্থদের দেখতে হাসপাতালে ভিড় করে শত শত শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ।
অভিভাবক মোসলেম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে আগের দিন এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়। পরের দিন সকাল পৌনে ১০টায় খোলা মাঠে পিটি (শরীরচর্চা) করানো হয়। রোদের মধ্যে দীর্ঘ সময় পিটি করানোয় আমার মেয়ের মতো অন্য ছাত্রীরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
একই ভাষ্য অভিভাবক মুক্তা বেগমেরও। তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার পরেও রোদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পিটি করানোর কারণে এ সমস্যা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, গণহারে ছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ বুঝতে পারছি না। অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার আব্দুর রহমান জানান, এ নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। গরমের কারণে হঠাৎ করে এ সমস্যা হয়েছে। ম্যাস হিস্টিরিয়ায় প্রথমে দুই-একজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দেখে অন্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত ছাত্রীরা সুস্থ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিকার কারণে ছাত্রীদের কোনো সমস্যা হয়নি। এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় গত বৃহস্পতি ও রোববার দুই দফায় ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের টিকা দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় তাদের অবজারভেশনে রাখা হয়। তখন কারও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার খবর পেয়ে আমি তৎক্ষণাৎ ওই স্কুলে ও হাসপাতালে যাই। পরে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে ছাত্রীদের উপজেলা সদরে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অসুস্থ ছাত্রীদের সহায়তায় প্রশাসন পাশে থাকবে।
- বিষয় :
- অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে