ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বিয়ের মেহেদি রঙ না মুছতেই যুবক খুন

বিয়ের মেহেদি রঙ না মুছতেই যুবক খুন

সোহান আহমেদ- বিয়ের দিনের ছবি

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ | ১২:২০ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫:০৬

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ১১ দিন আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সৌদি আরব ফেরত যুবক সোহান আহমেদ (২৩)। এখনও হাত থেকে মেহেদির রঙ মোছেনি তার। পূরণ হয়নি স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার স্বপ্ন, মেহেদির রঙ মোছার আগেই প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সোহান। সোমবার সন্ধ্যা রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে এ ঘটনায় আরও ২ জন আহত হয়েছেন। সোহানের লাশের ময়নাতন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে তার গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।

নিহত সোহান ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। সোহান কে বাঁচাতে গিয়ে তার চাচাতো দুই ভাই নুর আলমের ছেলে মোসাদ্দেক আলম (২৪) ও আবু সায়েদের ছেলে শহীদুল্লাহ (২৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মোসাদ্দেকের অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে আছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই সপ্তাহ পূর্বে সৌদি আরব থেকে দেশে আসে সোহান। এক সপ্তাহ আগে পাঞ্জারাই গ্রামে বিয়ে করেন। স্বপ্ন ছিল স্ত্রী সহকারে যাবেন স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে। কিন্তু স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল সোহানের। সোমবার সন্ধ্যায় ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের  ছেলে নুরকাছ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সোহানের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মাঝে হাতাহাতি শুরু হলে সোহান নিজেকে রক্ষায় দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ইনাতগঞ্জ বাজারের গলিতে প্রকাশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে সোহানকে একাধিক জখম করা হয়। এ সময় সোহানকে বাঁচাতে মোসাদ্দেক ও শহীদুল্লাহ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহান ও মোসাদ্দেককে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অপর আহত শহীদুল্লাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহানের মৃত্যু হয়। এদিকে হামলায় গুরুতর আহত মোসাদ্দেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিহত সোহানের চাচা মসুদ আহমেদ জিহাদী বলেন, আমার ভাতিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। প্রতিনিয়ত তারা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এর আগেও একাধিকবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলটি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকায় অবস্থিত।

আরও পড়ুন

×