শত্রুতায় বন্ধ হলো দুইশ বছরের রাস্তা

চাটমোহরের কাটেঙ্গা গ্রামে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করা হয়েছে সমকাল
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৫৩
চাটমোহরে পূর্ব বিরোধের কারণে ২০০ বছর পুরোনো একটি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ২২ পরিবারের শতাধিক মানুষকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অজ্ঞাত কারণে ইউপি চেয়ারম্যান এখনও কোনো ব্যবস্থা নেননি। বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা থেকে জানা যায়, আব্দুর রউফ প্রামানিকের বাড়ি থেকে মৃত ইউসুফ প্রামানিকের বাড়ি পর্যন্ত ২০০ ফিট লম্বা ও ১২ ফিট প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে ২০০ বছর ধরে ২২ পরিবারের শতাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। রাস্তাটি গুমানী নদীসংলগ্ন কাটেঙ্গা দক্ষিণপাড়া থেকে কাটেঙ্গা বাজারগামী। প্রতিদিন এ পথ দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাট-বাজার ও পাবনা শহরের চাকরির সুবাদে ২২ পরিবারের সদস্যরা যাতায়াত করেন।
গত ২৬ জুলাই একই এলাকার ওয়াজেদ আলী প্রামানিক, আহেদ আলী প্রামানিক, অহেদ আলী প্রামানিক, সবুরা খাতুন, আফরোজ খাতুন, ফরিদা খাতুন ও শামসুন্নাহার একজোট হয়ে লোকজন নিয়ে রাস্তাটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে আটকে দেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বসলেও কাজ হয়নি। উল্টো বাদীসহ ভুক্তভোগীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ২২ পরিবার কৃষিনির্ভর। তাদের উৎপাদিত ফসল গরুর গাড়ি, ভ্যান বা পাওয়ার টিলারে করে আনা-নেওয়া করতে হয়। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ফসল নিয়ে তারা বিপদে পড়েছেন। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপের পাশাপাশি অবৈধ দখলদারের কঠিন শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তারা।
মামলার বাদী আব্দুর রউফ প্রামানিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওয়াজেদ প্রামানিক রাস্তাটি দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি বাঁশ-খুঁটি দিয়ে যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
ছাইকোলা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমি চেয়ারম্যান নেই। আগে কী হয়েছে সেটি মনেও নেই। ইউনিয়ন তো অনেক বড়। ছোট ছোট বিষয় খবর রাখার মতো সময় ছিল না।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল বলেন, অভিযোগ পাইনি। আদালতে মামলা হয়েছে কিনা তাও জানি না। তদন্তের কোনো নির্দেশনা পাইনি।
- বিষয় :
- রাস্তা খোঁড়া