ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে নির্যাতন 

ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে নির্যাতন 

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:১১

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, রশি দিয়ে বেঁধে টেনে স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। জোরপূর্বক তাঁকে ছেলেধরার স্বীকারোক্তি আদায়েরও চেষ্টা চালায় স্থানীয় লোকজন।

গত মঙ্গলবার রাতে বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এক নারীকে হাত বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কয়েকজন। পানিধার বাজারে তাঁকে ঘিরে ধরেছে উৎসুক মানুষ। চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ। লোকজন তাঁকে একের পর এক প্রশ্ন করছে, কেউ তাঁকে গালি দিচ্ছে। চড়-লাথি মারছে। মারধরের ভয়ে ওই নারী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন। জোর করে তাঁকে ছেলেধরা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টাও করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামে। 

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কয়েক বছর আগে তাঁর বিয়ে হলেও মানসিক সমস্যার কারণে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকেন। গত ৯ নভেম্বর স্বজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্বজনরা তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে তিনি বড়লেখায় চলে আসেন। মঙ্গলবার রাতে বড়লেখা পৌরসভার পানিধার এলাকায় একটি বাড়িতে গেলে ওই বাড়ির লোকজন তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে আটকে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে জড়ো হয়ে সেখান থেকে তাঁর হাত বেঁধে টেনে টেনে তাঁকে পানিধার বাজারে নিয়ে যায়। বাজারে নিয়ে তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। অনেকে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে লাইভ করেন। 

খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বড়লেখা থানায় নিয়ে যায়। তাঁর নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা তা দেখে চিনতে পারেন। ওই নারীর চাচা গতকাল বুধবার দুপুরে বলেন, ‘আমার ভাতিজি তাহেরা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যা ভুগছে। অনেক চিকিৎসা করিয়েও সে সুস্থ হয়নি। রাতেই থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে থানা থেকে আমাদের জিম্মায় নিয়েছি। মারধরে সে শরীরে কিছুটা আঘাত পেয়েছে। তাকে এভাবে মারধর করাটা ঠিক হয়নি।’ 

বড়লেখা থানার ওসি আবদুল কাইয়ুম বলেন, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয় লোকজন আটক করে। 

আরও পড়ুন

×