গাইবান্ধা
বিএনপি-জামায়াতের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ

বিএনপি ও জামায়াতের দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৪৬ | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৪৬
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিএনপি ও জামায়াতের দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে আটটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঘন্টাব্যাপী চলা এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার রাত ৭টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের গেটে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে উভয় দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে পলাশবাড়ী চৌমাথা মোড়ে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়।
পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চৌমাথা মোড়ের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে মহড়া দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ঘটনার সময় পলাশবাড়ী থানা পুলিশ নীরব থাকলেও খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় নেতাকর্মীরা সড়ক থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামায়াতপন্থী রাহিদুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে পরিষদের সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব এবং প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের বিরোধ দেখা দেয়। বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসানের কার্যালয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে পরিষদের (সদস্য) মেম্বারদের মধ্যে কয়েকজন অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে কথা বলেন। এ নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিষদের গেটে এলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে দোকানসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল। ঘটনার সময় উভয় দলের নেতাকর্মী, পথচারী ও ব্যবসায়ীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
এদিকে, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মুহূর্তেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীসহ অনেকেই ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় দ্রুত দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঘটনার সময় পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা জানিয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টো মুঠোফোনে জানান, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কেউ আহত হয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে আহতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।
এ ব্যাপারে জানতে পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস ছামাদ ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম লেবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মুঠোফোনে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম লিয়াকত জানান, ঘটনার সময় তাদের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, মূলত মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনাস্থা, এই দুই বিষয়কে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় বিএনপি এবং জামায়াত কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনা স্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।