আদালতে শাজাহান ও সোবহান, গলায় ফুলের মালা দিয়ে মুক্তি দাবি

প্রিজনভ্যান থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান সাবেক দুই সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও আবদুস সোবহান
মাদারীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮:৫৭ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৯:২৬
মাদারীপুরের আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢোকে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান। এ সময় ভ্যানটিকে ঘিরে ধরেন সাবেক দুই সংসদ সদস্য শাজাহান খান ও আবদুস সোবহান ওরফে গোলাপের অনুসারীরা। পরে ভ্যান থেকে তাদের নামানো হলে ফুলের মালা পরিয়ে মুক্তির দাবি জানান নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাদারীপুরে কলেজছাত্র দীপ্ত দে ও রাজমিস্ত্রি তাওহীদ সন্ন্যামাত হত্যা মামলায় শাজাহান খান ও সোবহানকে রোববার প্রথমবারের মতো জেলার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের আদালতে তোলার খবরে সকাল থেকেই আদালত চত্বরে ভিড় করেন আওয়ামী লীগের কয়েকশ’ নেতাকর্মী।
বেলা ১১টার দিকে শাজাহান খান ও সোবহানকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক সাজিদ-উল-হাসান চৌধুরী আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। শাজাহান খান মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোবহান মাদারীপুর-৩ (কালকিনি ও সদরের একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
শাজাহান খান ও সোবহানকে আদালতের তৃতীয় তলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে নেওয়া হলে সেখানেও ভিড় করেন নেতাকর্মীরা। আদালতের কাঠগড়ায় অন্য আসামিদের মতো আলোচিত এই দুই নেতাকে তোলা হয়নি। তাদের কাঠগড়ার পাশে দুটি কাঠের চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়।
পরে শুনানি শুরু হলে দুজনই দাঁড়িয়ে বিচারকের কাছে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে মুক্তির আকুতি জানান। আদালতে কমপক্ষে ৩০ আইনজীবী শাজাহান খান ও সোবহানের পক্ষে জামিনের জন্য আবেদন জানান। পরে শুনানি শেষে বিচারক দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত থেকে শাজাহান খান ও সোবহানকে নামানোর সময়েও তাদের ঘিরে মুক্তির দাবি জানান অনুসারীরা।
মাদারীপুরে আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে মাদারীপুরের আদালতে প্রথমবারের মতো তোলা হয়েছে। আদালত চত্বরে যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, এ জন্য আমরা তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শুনানি শেষে আসামি দুজনকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান। গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শাজাহানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এর আগে ২৫ আগস্ট রাজধানীর নাখালপাড়ার একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার তেজগাঁও থানার পুলিশ। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আলোচিত দুই নেতাকে ঢাকার বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এবার দীপ্ত দে ও তাওহীদ সন্ন্যামাত হত্যা মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হলো।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, মাদারীপুরে আলোচিত দুটি হত্যা মামলায় শাজাহান খান ও সোবহানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তারা আগামী শুনানিতে এই দুই আসামির রিমান্ডের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানাবেন।
- বিষয় :
- মাদারীপুর
- শাজাহান খান
- আবদুস সোবহান গোলাপ
- মামলা