ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মারা গেলে ঋণের কিস্তি মাফ- এমন ধারণা থেকে প্রতিবন্ধী ভায়রাকে খুন

মারা গেলে ঋণের কিস্তি মাফ- এমন ধারণা থেকে প্রতিবন্ধী ভায়রাকে খুন

অভিযুক্ত রায়হানকে আটক করেছে পুলিশ। ছবি: সমকাল

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০:৪৩

মারা গেলে এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের টাকা মওকুফ হয়ে যাবে- এমন ধারনা থেকে নিজের ভায়রাকে হত্যা করেছে রায়হান নামে এক যুবক। অভিযুক্তের বাড়ি রাজশাহী বাঘা উপজেলায়। নিহত আনিছুর রহমান (৪২) বাঘার তুলশীপুর গ্রামের বাসিন্দা।

রোববার রাজশাহী আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে অভিযুক্ত রায়হান।

এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মনিগ্রামের একটি আমবাগানে বাক-প্রতিবন্ধী ভায়রা আনিছুর রহমানকে গলা কেটে হত্যা করে রাজমিস্ত্রীর সহকারী মো. রায়হান।

রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, নিহত আনিছুর রহমানের শ্যালিকার স্বামী রায়হান। রায়হান রডমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পরিবারের ব্যয়ভার ঠিকমত বহন করতে পারতেন না। আর্থিক সমস্যায় বিভিন্ন সময় আনিছুরের কাছ থেকে টাকা ধার করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেল চার মাস আগে রায়হান ক্ষুদ্রঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠান গাক থেকে বড় ভায়রা আনিছুর ও তার স্ত্রী পারভীনা বেগমের নামে ৯০ হাজার টাকা ঋণ নেন। নিজের নামে আগে থেকেই নেওয়া ঋণ ও ভায়রা আনিছুরের মাধ্যমে নেওয়া ঋণের কিস্তি ৯ হাজার টাকা দিতে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন। এরমধ্যে গত বুধবার পারভীনা বেগম ৫ হাজার টাকা ধার চান ছোট বোনের স্বামী রায়হানের কাছে। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ঋণের কিস্তির টাকা কীভাবে মওকুফ করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন। পরে লোকমুখে শুনতে পান ঋণগ্রহীতা দুজনের মধ্যে কোনো একজন মারা গেলে পুরো লোনের টাকা মওকুফ হয়ে যায়। সেটি জানতে পেরে রায়হান আনিছুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বাজার থেকে ৫০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কিনে। ধারের ৫ হাজার টাকা নেয়ার জন্য শুক্রবার ফোন করে ভায়রা আনিছুরকে মনিগ্রাম বাজারে আসতে বলে। কথামত বাজারে আসলে টাকা ধার দেওয়ার নাম করে রাতে আনিছুরকে বাজারের পাশের একটি আম বাগানে নিয়ে যায় রায়হান। পরে কথা বলার এক ফাঁকে রায়হান পিছন দিক থেকে আনিছুরের গলায় ছুরি চালায়। এতে আনিছুর ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, হত্যার রহস্যের কুলকিনারা করতে শনিবার সকালে তদন্তের শুরুতেই রায়হানকে সাথে নিয়ে মনিগ্রাম বাজারের বিভিন্ন স্থান পর্যবক্ষেণ করেছে পুলিশ। রায়হানের কথায় গরমিল পাওয়া গেলে তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। রোববার আদালতে হাজির করলে ১৪৪ ধারায় খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেয় রায়হান। এ ঘটনায় আনিছুরের স্ত্রী পারভীনা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।

আরও পড়ুন

×