ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

নেপথ্যে চোরাচালান, রামুতে যুবককে কুপিয়ে খুন

নেপথ্যে চোরাচালান, রামুতে যুবককে কুপিয়ে খুন

নিহত শাহাব উদ্দিন।

রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭:৪৬ | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭:৪৮

কক্সবাজারের রামুতে সীমান্তে চোরাচালান ব্যবসাকে কেন্দ্র করে শাহাব উদ্দিন (২৪) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শাহাব রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়া গ্রামের এমদাদ মিয়া প্রকাশ টুক্কুর ছেলে।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বালুবাসা গ্রামের শুকমনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাইল নোমান জানান, শনিবার রাতে চোরাচালানে জড়িত দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। স্থানীয়রা গুলির শব্দও শুনেছে। তবে কী কারণে বা কারা শাহাব উদ্দিনকে হত্যা করেছে, তা তিনি জানেন না।

তিনি আরও জানান, বর্তমান সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চোরাচালানকে ঘিরে স্থানীয় ও দূর-দূরান্তের অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে তার ইউনিয়ন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, বালুবাসা গ্রামের মোস্তাক আহমদের ছেলে আনছার উল্লাহসহ একদল গর্জনিয়া বাজার থেকে ফিরছিলেন। ফেরার পথে শুকমনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পৌঁছুলে নিহত শাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী ডাকাত তাদের গতিরোধ করে ৫ লাখ টাকাসহ সর্বস্ব লুট করে নেয়। পরে স্থানীয়রা শাহাব উদ্দিনকে ধরে গণধোলাই দেয়। পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে জানতে পারেন। তিনি আরও জানান- এ ঘটনায় আনছার উল্লাহ নামের একজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।

এদিকে নিহত শাহাব উদ্দিনের স্বজন ও গ্রামবাসীর দাবি ইয়াবা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। ইয়াবা আসল কিনা তা নিয়ে ইয়াবা বিক্রেতা ওবাইদুল আকবর রিমন ও ক্রেতা মো. শাহাব উদ্দিনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাদের টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ঘটে। এ সময় শাহাব উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহত শাহাব উদ্দিনের নিকটাত্মীয় সালাহ উদ্দিন বাবু বলেন, শনিবার রাতে একটি ফোন আসে শাহাব উদ্দিনকে বালুবাসা গ্রামে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে। কী কারণে এ ঘটনা তারা জানেন না। শাহাব উদ্দিনকে প্রচণ্ডভাবে প্রহার করা হয়েছে। মাথা ও শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন তারা। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পাওয়ায় সে মারা যায় বলে দাবি করেন তিনি। 

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী জানান আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে মর্মে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত আটকের চেষ্টা চলছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

×