ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বাঁশবুনিয়া বধ্যভূমি এখন গো-চারণভূমি

বাঁশবুনিয়া বধ্যভূমি এখন গো-চারণভূমি

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় অরক্ষিত বধ্যভূমি সমকাল

কাঁঠালিয়া (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:১৬

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়ার বধ্যভূমিটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। অর্থের অভাবে সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, গো-চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। 
বাঁশবুনিয়ায় ১৯৭১ সালের ২৫ মে সকালে আমুয়া বাঁশবুনিয়া ও ছোনাউটা গ্রাম ঘেরাও করে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। তারা তিন গ্রামের ৩৯ জন মুক্তিকামী মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমুয়া ইউনিয়নে একটানা অভিযান চালিয়ে ৫০০ ঘরে আগুন দেয়। চালানো হয় ব্যাপক লুটপাট। 
পাকিস্তানি সেনাদের হাতে দেবেন্দ্র রায়, হরেন্দ্রনাথ দাস, সুকুমার দত্ত, শম্ভু চরণ, বাবু রাম মালাকার, পরেশ চন্দ্র বালা, অনন্ত কুমার হালদার, সূর্যকান্ত মণ্ডল, কালিকান্ত মণ্ডল, প্রফুল্ল হালদার, কাশিশ্বর শীল, রাজ শীল, নারায়ণ হালদার, বিশ্বেশ্বর শীল, যজ্ঞেশ্বর হালদার, শ্যামকান্ত হালদার, গণেশ চন্দ্র হালদার, মায়া রানী, গঙ্গাচরণ মাঝি, সূর্যকান্ত মাঝি, রামকানাই মিস্ত্রি, সুধারাম মিস্ত্রি, হরেন্দ্রনাথ, কৈলাশ চন্দ্র দাস, হাতেম আলী, হাসেম মাঝি, আফজাল হোসেন, হাতেম হাজী, আঃ বারেক হাওলাদার, গণেশ চন্দ্র রায়, তোফাজ্জেল হোসেন রাজা  রমণী দাস, শিশু কুমার দাস, নিত্যানন্দ রজক দাস, জিতেন্দ্রনাথ, অমূল্য সাধক, শ্রী হরিনাথ, সনাতন ঠাকুর, অনন্ত কুমার রায়, মহেন্দ্রনাথ ও গোপাল চন্দ্র নাথ শহীদ হন। 
শহীদ হওয়া পরিবারগুলো স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া এক বান্ডিল ঢেউটিন ও ৬০০ টাকা ছাড়া আর কিছুই পায়নি। 
১৯৭১ সালে শহীদের স্মৃতি ধরে রাখতে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সংবাদপত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন মনজুর প্রচেষ্টায় বাঁশবুনিয়া হাই স্কুলের সামনে বধ্যভূমিতে ছোট পরিসরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। ৩৯ জন শহীদের নামফলক সংবলিত বধ্যভূমিটি অযত্ন, অবহেলা ও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। 
প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস এলেই বধ্যভূমিটি পরিষ্কার করা হয়। বছরের বাকিটা সময় অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকে বধ্যভূমিটি। 
বাঁশবুনিয়া গ্রামের মনোরঞ্জন হালদার জানান, পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাওয়ার পর কয়েকজন মিলে ৩টি গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দেন। 
আমুয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নারায়ণ চন্দ্র কাঞ্জিলাল বাবুল বধ্যভূমিটি রক্ষা করে শহীদদের যথাযথ মর্যাদার দাবি জানান। একই দাবি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক মৃধা। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, স্মৃতিসৌধের চারপাশে বাউন্ডারি দেয়াল দিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন

×